তিনি একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। অথচ স্বামীসহ তার সংসার ভারতে। ঘর সংসার বসবাস মূলত ভারতে হলেও বাংলাদেশে এসে সরকারি বেতন নিয়ে যান। এই চাঞ্চল্যকর খবরটি লোক জানাজানি হলে সেটা ম্যানেজ করার পাঁয়তারা চলছে বলেও অভিযোগ পাওয়া যায়।
ঘটনাস্থল ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ উপজেলা। এখানকার ভোমরাদহ ইউনিয়নের রাধিকাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুনীতি রানী রায় বাংলাদেশে সরকারি চাকরি করলেও স্বামী দেবাশিষের সঙ্গে সংসার করছেন ভারতে। সবকিছু গত ১০ বছর ধরে গোপন রাখতে সক্ষম হলেও বাঁধ সাধলো সাম্প্রতিক করোনা পরিস্থিতি।
সীমান্তে কড়াকড়ির জন্য জরুরি প্রয়োজনেও চাকরিস্থলে ফিরতে না পারায় ঘটনা জানাজানি হয়ে যায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রাইমারি শিক্ষক জানান, করোনার কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার সুযোগে তিনি ধরা পড়তেন না, তবে যখন সময়সীমা অতিক্রম করলেও সরকারি আদেশ অনুযায়ী তার স্কুল ম্যানেজমেন্ট কমিটি গঠন সম্পন্ন হলো না সেটা নিয়ে নাড়াচাড়া করতে গিয়েই বের হলো থলের বিড়াল।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১০ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর রাধিকাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম যোগদান করেন তিনি। দীর্ঘ ১০ বছর যাবত তিনি মাঝে মাঝে বিভিন্ন অজুহাতে ছুটি নিয়ে যাতায়াত করেন ভারতে। এর মধ্যে করোনাকালে মাতৃত্বকালীন ছুটি নিয়ে বাংলাদেশে থাকার কথা থাকলেও তিনি বর্তমান অবস্থান করছেন ভারতে।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষকের বাবা জগদীশ চন্দ্র রায় জানান, আমার মেয়ের বিয়ে হয়েছে নওগাঁ জেলায়। তার স্বামী ভারতের দিল্লিতে বসবাস করেন। এখন আমার মেয়ে সেখানেই আছে। করোনার জন্য আসতে পারছে না। আমার মেয়ে মাতৃত্বকালীন ৬ মাসের ছুটি নিয়ে তার স্বামীর কাছে গিয়েছে। এদিকে মাতৃত্বকালীন ছুটি শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও টানা ৩ মাস যাবৎ তিনি বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত। এ নিয়ে দীর্ঘ ৯ মাসেও তিনি বাংলাদেশে ফেরেননি। স্থানীয়রা জানান, প্রধান শিক্ষক না থাকায় বিদ্যালয়ের অনেক সমস্যা হচ্ছে।
এ বিষয়ে সেই ক্লাস্টারের সহকারী শিক্ষা অফিসার ফজলুল হক বলেন, তিনি মাতৃত্বকালীন ছুটি নিয়েছিলেন। সেই ছুটির মেয়াদ শেষ হলেও তিনি যোগদান করেননি। আমরা তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পারিনি। তাকে শোকজ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে পীরগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. হাবিবুল ইসলাম বলেন, আমি বিষয়টি অবগত হয়েছি। অভিযোগ পেলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।