সামাজিক দূরত্ব না মেনে চাঁদপুর কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসে ভিড় করেছেন টিকা প্রত্যাশীরা
সামাজিক দূরত্ব না মেনে চাঁদপুর কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসে ভিড় করেছেন টিকা প্রত্যাশীরা
চাঁদপুরে তিন দিনেও করোনার টিকার রেজিস্ট্রেশন করতে পারেননি বিদেশগামীরা। সামাজিক দূরত্ব না মেনে চাঁদপুর কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসে ভিড় করেছেন টিকা প্রত্যাশীরা। এতে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। খবর পেয়ে জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
রবিবার (৪ জুলাই) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চাঁদপুর কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসে টিকা প্রত্যাশীদের ভিড় দেখা যায়। পরে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা টিকা প্রত্যাশীদের নিজ নিজ ইউনিয়নের তথ্যকেন্দ্রে রেজিস্ট্রেশন করার কথা বলেন।
কচুয়া উপজেলা থেকে আসা রবিউল ও হাজীগঞ্জের বলাখালের নুর হোসেন জানান, সকাল ৯টার সময় জনশক্তি অফিসে এসেছেন তারা। লকডাউনের মধ্যে অনেক কষ্ট করে এখানে আসতে হয়েছে তাদের। এসেও যদি কাজ হতো তাহলে মনকে বুঝাতে পারতেন। সকাল থেকে সার্ভার সমস্যার কথা বলা হচ্ছে। তিন দিন ধরে একই সমস্যার কথা বলা হচ্ছে তাদের।
জেলা জনশক্তি জরিপ কর্মকর্তা মো. মোহসেন পাটোয়ারী বলেন, প্রবাসীদের কর্মস্থলে গমন নিরাপদ ও ঝুঁকিমুক্ত করতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করোনার টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বিএমইটির স্মার্টকার্ড আছে সেসব কর্মীর টিকার জন্য সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধনের সুবিধার্থে বৈধ পাসপোর্ট দিয়ে ২ জুলাই থেকে বিএমইটির ডাটাবেজে নিবন্ধন করতে হবে। তারা যদি এই টিকা না নিয়ে বিদেশে গমন করেন, তাহলে ৭০-৮০ হাজার টাকা খরচ হবে। প্রবাসীদের সুবিধার্থে আগেই রেজিস্ট্রেশন শুরু হয়েছে। কিন্তু সার্ভার সমস্যার কারণে রেজিস্ট্রেশন কাজে সমস্যা দেখা দেয়।
এদিকে জনশক্তি অফিসে প্রচণ্ড ভিড়ের খবর পেয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে ছুটে যান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অসিম চন্দ্র বণিক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা শাহনাজ, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সামিউল ইসলাম, অমিত চক্রবর্তী, চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুর রশিদ।
সেনাবাহিনী কুমিল্লা অঞ্চলের ক্যাপ্টেন সায়েম বলেন, পুরোনো প্রবাসীরা এখন থেকে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন। যারা নতুন প্রবাসী তাদের এখানে আসতে হবে। যাদের ভিসার মেয়াদ শেষ পর্যায়ে, মূলত তারাই দ্রুত টিকা নেওয়ার জন্য এখানে ভিড় করছেন বলেও জানান ক্যাপ্টেন সায়েম।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা শাহনাজ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, লকডাউনের মধ্যে এমন জটলা সৃষ্টি করা যাবে না। তিন ধরে কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসে টিকা প্রত্যাশাদের ভিড়ের কারণে স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন হচ্ছে। প্রতিটি ইউনিয়নের উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে পারবেন টিকা প্রত্যাশীরা।
তিনি বলেন, বিদেশগামী কর্মীদের বলা হয়েছে, টিকার রেজিস্ট্রেশন নিজ নিজ ইউনিয়নের উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে করা হবে। তাদের রেজিস্ট্রেশন করে দেওয়ার জন্য ইউএনওদের মাধ্যমে জেলা প্রশাসক সব উদ্যোক্তাদের নির্দেশনা দিয়েছেন। এটি নতুন হওয়ায় উদ্যোক্তারাও অ্যাপের সঙ্গে পরিচিত নয়। তাই তারা এখনও শিখছেন। আশা করি, দু-একদিনের মধ্যেই এটির সমাধান হয়ে যাবে। রেজিস্ট্রেশন সব ইউনিয়নেই হবে। এখানে আর ভিড় হবে না।