নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলায় চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রীকে (১১) ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে সালিশে ১০ বার কান ধরে উঠবস করিয়ে ছেড়ে দেওয়া আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শনিবার (২১ জানুয়ারি) বিকেলে ভুক্তভোগীর বাবা বাদী হয়ে ধর্ষণচেষ্টার মামলা করেন। পরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তি চাটখিল উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের রুস্তম পাটোয়ারীর ছেলে মো. সোহেল (৩৫)। তার মামা কাজী বেলাল ওই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি।
জানা গেছে, রোববার (১৫ জানুয়ারি) রাত ৯টায় ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীকে স্থানীয় জনতা বাজার থেকে প্রতিবেশী চাচা মো. সোহেলের সঙ্গে বাড়ি পাঠালে শিশুটিকে নির্জন স্থানে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে। পরে এ ঘটনায় স্থানীয় মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান বাহালুলের নেতৃত্বে শিশুটির বাড়িতে সালিশ বৈঠক বসে। এ সময় অভিযুক্ত সোহেল, তার বাবা রুস্তম পাটোয়ারী, মামা আওয়ামী লীগ নেতা কাজী বেলালসহ শতাধিক লোক উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সোহেলকে ১০ বার কান ধরে উঠবস করার শাস্তি দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে সালিশ মেনে নিতে সাদা স্ট্যাম্পে উভয় পক্ষের স্বাক্ষর নেওয়া হয়। তবে সালিশ বৈঠকের দায়িত্বে থাকা মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান বাহালুল সালিশ বৈঠক ও শাস্তি দেওয়ার কথা স্বীকার করেন। মামলার পর তাকে মোবাইল ফোনে কল দিলে কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।
ভুক্তভোগীর বাবা বলেন, সালিশে বাধ্য করে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছিল। আমরা অসহায় মানুষ, আইনের সহায়তা নেওয়ার মতো কেউ পাশে ছিল না। গণমাধ্যমকর্মী ও পুলিশের সহযোগিতায় মামলা দায়ের করেছি।
চাটখিল থানার দায়িত্বে থাকা পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আবু জাফর জানান, শনিবার বিকেলে মামলা হওয়ার পর আসামি সোহেলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আগামীকাল রোববার (২২ জানুয়ারি) সকালে তাকে ধর্ষণচেষ্টার মামলায় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হবে।