চট্টগ্রাম-দুবাই রুটে এবার কার্গো ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাতভিত্তিক বিমান সংস্থা ফ্লাই দুবাই। এতদিন যে উড়োজাহাজে যাত্রী পরিবহন করত সেই উড়োজাহাজেই যাত্রীর বদলে বিমানেই পণ্য পরিবহন করছে বিমান সংস্থাটি। প্রাথমিকভাবে আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত তিনটি ফ্লাইট পরিচালনা করবে ফ্লাই দুবাই; কার্গো বুকিং বাড়লে ফ্লাইট সংখ্যাও বাড়বে।
প্রথম উড়োজাহাজটি দুবাই থেকে রওনা দিয়ে গতকাল মঙ্গলবার বিকালে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেছে। এতে বিভিন্ন ধরনের প্রায় ১৮ টন পণ্য রয়েছে। করোনাভাইরাসের কারণে দেশে অঘোষিত লকডাউন শুরুর পর এটিই প্রথম কার্গো ফ্লাইট।
জানতে চাইলে ফ্লাই দুবাই এর চট্টগ্রামের প্রধান মরিয়াম সুলতানা কালের কণ্ঠকে বলেন, আমরা সপ্তাহে সাত দিনই ফ্লাইট পরিচালনার আবেদন করেছিলাম কিন্তু পেয়েছি আপাতত দুটি। মঙ্গলবার বিকালে একেবারে ফুল ফ্লাইট নিয়ে উড়োজাহাজটি চট্টগ্রাম পৌঁছেছে। আশা করছি বাকি ফ্লাইটগুলোতে এ রকম ভালো বুকিং পাব।
তিনি বলেন, আমাদের নিয়মিত যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ বোয়িং ৭৩৭-৮০০ দিয়েই এখন কার্গো পরিবহন করছি। এতে সাধারণত ১৭ থেকে ১৮ টন পণ্য নেওয়া যায়।
জানা গেছে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ২৬ মার্চ লকডাউন শুরুর আগে চট্টগ্রাম-দুবাই রুটে প্রতিদিন একটি যাত্রীবাহী ফ্লাইট চালাত ফ্লাই দুবাই। ঢাকা থেকে এমিরেটস এয়ারলাইনস যাত্রীবাহী ফ্লাইট পরিচালনার করছে কিন্তু বাংলাদেশের যাত্রীদের সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। ওই ফ্লাইটে শুধু ট্রানজিট যাত্রী অর্থাৎ দুবাই হয়ে বিভিন্ন দেশের গন্তব্যে রওনা দিতে পারবেন। এই অবস্থায় ফ্লাই দুবাইও যাত্রীবাহী ফ্লাইট পরিচালনার আবেদন করে রেখেছে; কিন্তু অনুমোদন মেলেনি।
তাই যাত্রীবাহী ফ্লাইটেই কার্গো পরিবহনের অনুমতি নিয়ে পণ্য পরিবহন শুরু করেছে বিমান সংস্থাটি। উল্লেখ্য, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের নির্দেশনামতে পণ্যবাহী ফ্লাইটে কার্গো পণ্য পরিবহনের সুযোগ রয়েছে; তবে তাতে কোনো যাত্রী থাকতে পারবে না।
এতদিন ফ্লাইট না থাকায় কাস্টমসের উপস্থিতি ছিল নামমাত্র। এখন দুবাই থেকে আসা পণ্য তদারকিতে কতটা প্রস্তত কাস্টমস? জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কাস্টমস কমিশনার ফখরুল আলম কালের কণ্ঠকে বলেন, আমরা এসব পণ্য ছাড়ের জন্য বিশেষ নজরদারি রেখেছি; বিমানবন্দরে এআইআর শাখার স্পেশাল টিম রাখা হয়েছে। চালানের সব পণ্য স্ক্যান করা হবে আর সন্দেহভাজন কোনো পণ্য থাকলেই সাথে সাথে বাড়তি তল্লাশি করা হবে। কোনোভাবেই যাতে শুল্কফাঁকি কিংবা অবৈধ-চোরাই পণ্য বের হতে না পারে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, আবুধাবি, দুবাই, শারজাহ থেকে প্রচুর পণ্য লাগেজে করে চট্টগ্রাম আসে; আবার কার্গোতেও আসে পণ্য। এসব পণ্যের মধ্যে প্রসাধনী সামগ্রী থেকে শুরু করে খাদ্যপণ্য, মোবাইল, মোবাইল এক্সেসরিজ, ইলেকট্রনিক্স পণ্য, স্যানিটারি পণ্যও রয়েছে। সব ধরনের ফ্লাইট বন্ধ থাকায় এসব পণ্যের টান পড়েছে বাজারে। এসব পণ্য অবৈধভাবে বিক্রির জন্য রিয়াজউদ্দিন বাজারে গড়ে উঠেছে বিশাল বাজার। ঈদের পর দোকানপাট খোলার পর থেকে সেখানে পণ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। তাই কার্গো ফ্লাইটে এসব পণ্য আনার উদ্যোগ নিয়েছে ব্যবসায়ীরা।