চলতি ২০২০ সালের প্রথম ছয় মাসে সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষীদের গুলি ও নির্যাতনে বাংলাদেশি নাগরিকদের মৃত্যুর ঘটনা গত বছরের তুলনায় বেড়েছে বলে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর সংগ্রহ করা তথ্যে দেখা গেছে।
এসব তথ্য বলছে, জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত সীমান্তে ২৫ জন বাংলাদেশি নাগরিক নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ২১ জনেরই মৃত্যু হয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বা বিএসএফের সৈন্যদের গুলিতে।
মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা বাংলাদেশের অন্যতম বেসরকারি সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র এই তথ্য জানিয়েছে। বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় কয়েকটি সংবাদপত্রের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এই রিপোর্ট তৈরি করেছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র বা আসক।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, বিগত বেশ কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সম্পর্কে উন্নতি ঘটলেও তার প্রতিফলন দেখা যায়নি দুই দেশের সীমান্তে। সীমান্তহত্যা বন্ধে দুই দেশের মধ্যে কয়েক দফা আলোচনা হলেও তাতে সীমান্ত পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটেনি, বরং মাঝে কিছুটা কমার পর সীমান্তে হত্যাকাণ্ডের সংখ্যা আবার বেড়ে চলেছে।
তবে বিএসএফ কর্মকর্তারা বিবিসি বাংলাকে জানান যে সীমান্তে অপরাধের সঙ্গে জড়িতরা ভারতীয় প্রহরীদের ওপরে আক্রমণ করলে তবেই কেবল প্রাণ বাঁচাতে তারা গুলি চালিয়ে থাকেন।
সীমান্তে বাড়ছে হত্যাকাণ্ড
গত বছরের প্রথম ছয়মাসে সীমান্তে যতগুলো হত্যাকাণ্ড হয়েছে, এই বছরের প্রথম ছয়মাসে সেই সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে জুন মাসের মধ্যে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে ১৮ জন বাংলাদেশি নাগরিকের মৃত্যু হয়েছিল, আর নির্যাতনে মারা গেছেন দুই জন।
অথচ ২০২০ সালের প্রথম ছয়মাসে সীমান্তে হত্যাকাণ্ডের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫ জনে।
অন্যদিকে, ২০১৮ সালের তুলনায় ২০১৯ সালে সীমান্ত হত্যাকাণ্ডের সংখ্যা তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়েছিল।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৯ সালের পুরো সময়টায় ভারতের সীমান্তরক্ষা বাহিনী বা বিএসএফ’র হাতে প্রাণ হারিয়েছিলেন ৪৩ জন বাংলাদেশি – যাদের মধ্যে ৩৭ জন প্রাণ হারিয়েছিলেন গুলিতে, আর বাকি ৬ জনকে নির্যাতন করে মারা হয়।
উৎসঃ বিবিসি বাংলা