বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া রাজনীতিতে ফিরছেন কি—না এমন প্রশ্নে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘এই বিষয়টা আওয়ামী লীগের নেতাদের জিজ্ঞাসা করুন। বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে যে সাজা সেটা সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। মুক্ত করা হয়নি। আমাদের দাবি পরিষ্কার। তাঁকে পুরোপুরি মুক্তি দিতে হবে, এরপর রাজনীতি নিয়ে চিন্তা।’
আজ মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) জিয়াউর রহমানের সমাধিতে ফুলেল শ্রদ্ধা শেষে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এসব কথা বলেন।
এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়। রাষ্ট্র ক্ষমতাকে ব্যবহার করে ক্ষমতা দখল করে আছে। জনগণের প্রতি এদের কোনো দায়বদ্ধতা নেই। নেই জবাবদিহিতামূলক কোনো পার্লামেন্ট। সেজন্যই তারা একের পর এক অপ্রয়োজনীয় প্রজেক্টের টাকা ব্যয় করছে এবং টাকা লুট করে বিদেশে পাচার করছে। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধিতে দেশের মানুষ যখন দিশেহারা তখন তারা উৎসব শুরু করেছে। শুধু তাই নয়, তারা তো স্বীকার করতেই চায় না যে দেশে অর্থনৈতিক সংকট আছে। মোটকথা এই সরকার পুরোপুরি দুর্নীতিপরায়ণ সরকার। অতীতে এমন দুর্নীতি হয়েছে বলে আমাদের জানা নাই।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জনগণের সমস্যা সমাধান না করে নিজেরা উৎসবে ব্যস্ত। এজন্য রাষ্ট্রপতির এলাকায় গেছেন প্রধানমন্ত্রী। ওএমএসের কার্যক্রম বন্ধ করে কার্ডের মাধ্যমে চাল বিতরণে সরকারের উদ্যোগ আবার দুর্নীতি করতে। বিদ্যুৎ নিয়ে আদানীর সঙ্গে অপ্রয়োজনীয় অসম চুক্তি করা হচ্ছে। টাকা লুট করে বিদেশে পাচার করার জন্য। মূল্যস্ফীতির কারণে জনগণের জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠেছে। এজন্য একমাত্র আন্দোলনের মাধ্যমেই সরকারকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হবে। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধির প্রতিবাদে আমরা যখন আন্দোলন শুরু করেছি সেই আন্দোলন করতে গিয়ে আমাদের ওপর তারা রাষ্ট্রশক্তিকে লেলিয়ে দিয়েছে। আমাদের ১৭ জন নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছে। তাই পরিষ্কার করে বলছি এই গণবিরোধী আওয়ামী লীগকে পরাজিত করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘যুবদলের নবনির্বাচিত পূর্ণাঙ্গ কমিটির কার্যকরী পরিষদের সদস্যদের নিয়ে সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে আমরা এখানে এসেছিলাম স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানের মাজারে জিয়ারত করতে, শ্রদ্ধা জানাতে। এখানে যুবদল শপথ নিয়েছে বর্তমানে যে গণতন্ত্রবিরোধী এবং রাষ্ট্রবিনাশী সরকার ক্ষমতা দখল করে বসে আছে তাদের খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্বে গণ আন্দোলন সৃষ্টি করে গণ অভ্যুত্থান মাধ্যমে সরিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে জীবন বাজি রেখে লড়াই করবে। আমরা এখনও দাবি করছি অবিলম্বে এই অনির্বাচিত সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। সংসদ বিলুপ্তি এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে গঠিত নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে সবার অংশগ্রহণে অবাধ সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আদায় হবে।’
যুবদলের নবগঠিত কমিটি প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ছাত্রদল, যুবদল বিশাল সংগঠন, এখানে যারা পদায়ণ হয়েছে সবাই যোগ্য। যাদেরকে জায়গা দেওয়া সম্ভব হয়নি তাদের অন্যান্য সংগঠনগুলোতে যোগ্যতা অনুসারে বিবেচনা করা হবে।’
এসময় উপস্থিত ছিলেন—বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সাধারণ সম্পাদক আবদুল মুনায়েম মুন্না, যুবদল নেতা মামুন হাসান, নুরুল ইসলাম নয়ন, শফিকুল ইসলাম মিল্টন, ইসহাক সরকার, শরিফউদ্দিন জুয়েল প্রমুখ।