কুয়েতের নতুন আমির শেখ নাওয়াফ আল-আহমাদ আস-সাবাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আবদুল মোমেন। এ সময় সদ্য প্রয়াত আমির সাবাহ আল-আহমাদ আল-জাবের আল-সাবাহ’র মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বাংলাদেশের সরকার এবং জনগণের পক্ষ গভীর শোক প্রকাশ করেন ড. মোমেন।
শেখ সাবাহ’র মৃত্যুতে বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয়ভাবে শোক পালনের বিষয়টি নতুন আমিরকে অবহিত করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রাক্তন আমির প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি অত্যন্ত উদার ছিলেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তি মতে, প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে নতুন আমিরকে অভিনন্দন জানান মোমেন এবং করোনা পরবর্তীকালে তাঁকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। প্রবাসী বাংলাদেশিদের সহযোগিতার জন্য কুয়েতের প্রতি কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেন তিনি।
সাক্ষাৎকালে ড. মোমেন উল্লেখ করেন, ১৯৭৪ সালে তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সদ্যপ্রয়াত আমির শেখ সাবাহ বাংলাদেশে এসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ওআইসি’র সম্মেলনে নিয়ে গিয়েছিলেন। এটা বাংলাদেশ ও কুয়েতের সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি যুগান্তকারী ঘটনা এবং এরপর অনেক মুসলিম দেশ বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়।
বাংলাদেশ ও কুয়েতের সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক অধিকতর সুদৃঢ় হবে বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এ সময় নতুন আমিরকে লেখা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদের দু’টি চিঠি হস্তান্তর করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এতে প্রেসিডেন্ট সদ্য প্রয়াত আমিরের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করা ছাড়াও নতুন আমিরকে অভিনন্দন জানান।
পরে ড. মোমেন কুয়েতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আহমাদ নাসের আল মোহাম্মেদ আল-আহমেদ আল-জাবের আল-সাবাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। কুয়েত ও বাংলাদেশের মধ্যে ফ্লাইট চালু না হওয়ায় ছুটিতে বাংলাদেশে এসে আটকেপড়া কুয়েত প্রবাসী বাংলাদেশিদের দুশ্চিন্তার বিষয়টি কুয়েতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি দ্রুততম সময়ে বাংলাদেশের সঙ্গে কুয়েতের ফ্লাইট পূণর্বহালের অনুরোধ জানান। কুয়েতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ বিষয়ে দু’দিন পর সভা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে উল্লেখ করেন।
ড. মোমেন কুয়েতকে বাংলাদেশে তেল পরিশোধনাগার স্থাপনের আহবান জানান এবং দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ ক্ষেত্রে বিনিযোগের আগ্রহ প্রকাশ করেন। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হাইটেক পার্কে কুয়েতকে বিনিয়োগের আহ্বানও জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন। এ সময় বাংলাদেশের ডাক্তার, নার্স এবং তথ্য প্রযুক্তিতে দক্ষ ব্যক্তিরা কুয়েতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখতে পারবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বাংলাদেশের শ্রমিকদের কৃষিকাজে নিয়োগের আাহবান জানান। কুয়েতকে বাংলাদেশ থেকে ঔষধসামগ্রী ও পিপিই আমদানির আহবানও জানান ড. মোমেন। এ সময় কুয়েতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের প্রবাসী শ্রমিকদের দক্ষতার প্রশংসা করেন। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের বিষয়ে কুয়েতের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলেও জানান ড. আহমাদ নাসের। উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হিসেবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী দু’দিনের সফরে কুয়েতে অবস্থান করছেন। সঙ্গে আছেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনও। মঙ্গলবার তাদের উভয়ের দেশে ফেরার কথা রয়েছে।