
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে নাহারুল ইসলাম (৪০) নামের এক শিক্ষককে আটক করেছে পুলিশ। নাহারুল ইসলাম উপজেলার আল্লারদর্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সহকারী শিক্ষক। এ ঘটনায় ওই শিক্ষককে অপসারণের দাবিতে বিদ্যালয় চত্বরে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের একাংশ। তবে অভিযুক্ত শিক্ষকের দাবি, পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হয়েছে তাকে।
বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে স্কুল চত্বর থেকে ওই শিক্ষককে আটক করা হয়। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তিনদিন আগে নাহারুল ইসলামের আল্লারদর্গা হলুদবাড়ীয়া গ্রামের বাড়িতে প্রাইভেট পড়তে যায় একই স্কুলের নবম শ্রেণির এক ছাত্রী। এ সময় ওই শিক্ষকের স্ত্রী বাড়িতে না থাকায় ছাত্রীকে একা পেয়ে কুপ্রস্তাব দেন শিক্ষক নাহারুল ইসলাম। শিক্ষকের প্রস্তাবে রাজি না হয়ে ওই ছাত্রী স্কুলে ফিরে প্রথমে বিষয়টি তার সহপাঠীদের জানায়। পরে সহপাঠী ও স্কুলের অন্যান্য শিক্ষার্থীরা অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্কুলের প্রধান শিক্ষক কামরুল ইসলামের কাছে নালিশ দেন।
তবে ঘটনার ৩ দিন পার হলেও অভিযুক্ত শিক্ষক নাহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় স্কুলের শিক্ষার্থীরা বুধবার শিক্ষকের অপসারণ চেয়ে জুতা স্যান্ডেল নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের বিক্ষোভে এলাকার অভিভাবকরাও অংশ নিলে স্কুলে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। খবর পেয়ে দৌলতপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শিক্ষক নাহারুল ইসলামকে আটক করে থানা হেফাজতে নেয়।
এ বিষয়ে আল্লারদর্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামরুল হাসান জানান, শিক্ষক নাহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে শিক্ষার্থীরা আমাকে জানিয়েছিল। বিষয়টি আমি স্কুলের ম্যানেজিং কমিটিকে অবহিত করি। ম্যানেজিং কমিটি সিদ্ধান্ত নেয়ার আগেই শিক্ষার্থীরা বুধবার বিক্ষোভ প্রদর্শন করে ওই শিক্ষকের অপসারণ দাবি করে। অভিযুক্ত শিক্ষক নাহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে আগেও এমন অভিযোগ পাওয়ার কথা তিনি স্বীকার করেন। ক্লাস চলাকালে ওই শিক্ষক ছাত্রীদের সাথে অসাদাচারণ করেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
তবে শিক্ষক নাহারুল ইসলাম তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কিছু মহল স্কুলে তার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ষড়যন্ত্র করে তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, আমি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছি। এ নিয়ে দৌলতপুর থানার ওসি (তদন্ত) মোস্তফা হাবিবুল্লাহ জানান, আটক শিক্ষক নাহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে দৌলতপুর থানায় যৌন হয়রানি, নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।