কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ভেড়ামারা সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষক সানোয়ার হোসেন কর্তৃক প্রাইভেট ছাত্রের মা (৪২) ও বোনকে (২২) কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় ভেড়ামারা থানায় মামলা দায়ের করেছেন আহত মহিলার স্বামী।
মামলার অভিযোগ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ভেড়ামারা সরকারি মহিলা কলেজের ইংরেজি বিষয়ের প্রভাষক সানোয়ার হোসেন (৩৫) ভেড়ামারা পৌর শহরের নওদাপাড়া এলাকায় দশম শ্রেণি পড়ুয়া এক ছাত্রের বাসায় গিয়ে নিয়মিত প্রাইভেট পড়ান। একপর্যায়ে তিনি ওই ছাত্রের মাকে অনৈতিক কাজের জন্য কুপ্রস্তাব দেন।
সোমবার বেলা ৩টার দিকে আবার ওই বাড়িতে গেলে এ নিয়ে সানোয়ারের সঙ্গে ওই গৃহবধূর কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে প্রভাষক সানোয়ার রান্নাঘর থেকে বঁটি নিয়ে ছাত্রের মাকে মাথায় ও পেটে আঘাত করেন। এ সময় অনার্স পড়ুয়া মেয়ে এগিয়ে গেলে তাকেও আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন।
তাদের ডাক-চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে প্রভাষক সানোয়ারকে ধরে গাছের সঙ্গে বেঁধে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে খবর দেন। থানা পুলিশের এসআই প্রকাশ রায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে প্রভাষক সানোয়ারকে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন।
দুই সন্তানের জনক প্রভাষক সানোয়ার হোসেন কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার নওদা বহলবাড়িয়া গ্রামের মো. ইদবার আলীর পুত্র। তিনি ভেড়ামারার নওদাপাড়ায় সস্ত্রীক ভাড়া থাকতেন।
এদিকে মুমূর্ষু অবস্থায় গৃহবধূকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং তার মেয়েকে ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়। ডাক্তাররা ওই গৃহবধূর শরীরে ৬২টি সেলাই দিয়েছেন বলে তার স্বামী জানান। রাতেই উক্ত গৃহবধূর ব্যাংক কর্মকর্তা স্বামী বাদী হয়ে সানোয়ার হোসেনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন।
ভেড়ামারা থানার ওসি মোহাম্মদ শাহ্জালাল জানান, ঘটনার সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষণিক পুলিশ গিয়ে প্রভাষক সানোয়ারকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। ভিকটিমের পক্ষ থেকে সানোয়ার হোসেনকে আসামি করে একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে এবং মামলা দায়ের করা হয়েছে। পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
এদিকে সরেজমিন এলাকাবাসী জানান, ওই শিক্ষকের সঙ্গে গৃহবধূর সম্পর্ক ছিল। শিক্ষকের স্ত্রী প্রতিবাদ করলে তাকে অত্যাচার ও মারধর করতেন। ইতোপূর্বেও এ নিয়ে ঝামেলা হয়েছিল। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে তাদের সতর্ক করা হয়েছিল, কিন্তু তারা শুনতেন না। ভেড়ামারার স্বনামধন্য একটি কলেজের একজন শিক্ষক হয়ে এহেন জঘন্য কাজের উপযুক্ত শাস্তি দাবি করেছেন এলাকাবাসী।
ভেড়ামারা সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বললে তিনি এ ঘটনার তদন্তসাপেক্ষে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।
উৎসঃ যুগান্তর