ভালো নেই সদ্য কারামুক্ত কার্টুনিস্ট আহমেদ কবীর কিশোর। তিনি কারাগারে থাকার সময় প্রায় নয় কেজি ওজন হারিয়েছেন, ডায়াবেটিসের মাত্রা বেড়েছে, কানে পুঁজ জমে শুনতে সমস্যা হচ্ছে, ঠিকমতো হাঁটতে পারেন না। এ ছাড়াও তার কথা বলতে সমস্যা হচ্ছে। কোনো কিছু স্মরণ করতেও অসুবিধা হচ্ছে।
১০ মাস কারাভোগের পর গত বৃহস্পতিবার জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর পরই ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন কিশোর। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের অধীনে তিনি চিকিৎসাধীন আছেন। হাসপাতালে তার কান ও চোখের পরীক্ষা করা হয়েছে। করা হয়েছে বাঁ পায়ের এক্সরেও।
তবে পায়ে অত্যধিক ব্যথার কারণে কিশোরের হাঁটতে কষ্ট হচ্ছে। আপাতত কিশোরের কাছ থেকে মোবাইল দূরে রাখা হয়েছে। যেসব পরীক্ষা করা হচ্ছে, আজকালের মধ্যে তার প্রতিবেদন পাওয়া যাবে বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।
কিশোর মুক্ত হওয়ার পর গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন যে, তাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর অজ্ঞাত স্থানে ৬৯ ঘণ্টা কার্টুন নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছে। এরপর স্টিলের পাত বসানো লাঠি দিয়ে পায়ে পেটাতে থাকে তারা। শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। তারা কানে মারার কারণে কান দিয়ে রক্ত পড়তে থাকে। কানে পুঁজও জমেছে।
এ বিষয়ে কিশোরের ভাই আহসান কবির গতকাল মানবজমিনকে জানান, কিশোরের ৯ কেজি ওজন কমেছে। ব্লাডে সুগারের মাত্রা বেড়েছে। তিনি আরো জানান, কিশোরকে ধরে নিয়ে যাওয়ার পর নির্যাতন করা হয়েছে বলে সে পরিবারকে জানিয়েছে। হঠাৎ কিছু স্মরণ করতে পারছে না। সময় নিয়ে স্মরণ করছে।
২০২০ সালের ৫ই মে কার্টুনিস্ট কিশোর এবং লেখক মুশতাক আহমেদকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। সরকারবিরোধী প্রচার ও গুজব ছড়ানোর অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে তাদের বিরুদ্ধে রমনা থানায় মামলা করা হয়। একই মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া আরো দু’জনের জামিন হলেও কিশোর ও মুশতাকের জামিন হয়নি। এর মধ্যে মুশতাক গত ২৫শে ফেব্রুয়ারি কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারে মারা যান। তার মৃত্যু নিয়ে ঢাকাসহ সারা দেশে আন্দোলনে নামে প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনসহ অন্যান্য সংগঠন। তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তদন্ত রিপোর্টের বরাতে জানানো হয়েছে, তার মৃত্যু স্বাভাবিকভাবেই হয়েছে। বুধবার হাইকোর্ট কিশোরকে ছয় মাসের জামিন দেয়।