করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশেই চলছে লকডাউন। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোর বেশির ভাগই বন্ধ, ঘর থেকে বের হওয়ায়ও রয়েছে কড়া নিষেধাজ্ঞা। কানাডায়ও এর ব্যতিক্রম নয়।
কানাডা সরকার সচেতনতামূলক নানা কর্মসূচি ও পদক্ষেপ নেয়া সত্ত্বেও দেশটিতে মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ হচ্ছে। কানাডার বিভিন্ন রাজনীতিক, অর্থনীতিবিদ এবং স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রতিনিধিরা আলাপ-আলোচনা করছেন বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে।
ইতিমধ্যে কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়ায় পরিস্থিতি উন্নত হলে সেখানে লকটাউন তুলে নেয়া হয়েছে। এখনো কুইবেক এবং অন্টারিওতে লকডাউন থাকলেও তা যেকোনো সময় তুলে নেয়া হতে পারে, কারণ অর্থনীতি চালু করে ঘুরে দাঁড়াতে হবে বলে প্রশাসন মনে করছে। আলবার্টা প্রভিন্সে লকডাউন ধীরে ধীরে শিথিল করার পরিকল্পনা চলছে। তবে একসঙ্গে সবকিছু খুলে দেয়ার পরিকল্পনা আপাতত নেই।
এদিকে পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে মাইকে মাগরিবের আজান প্রচারের অনুমতি দিয়েছে টরোন্টো, অটোয়া, মিসিসাউগা এবং ক্যালগেরি সিটি কাউন্সিল।
করোনাভাইরাসের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতি বিবেচনা করে সিটি কাউন্সিলগুলো আলাদাভাবে ওই অনুমোদন দেয়। সংক্ষিপ্ত আকারে আজান প্রচার করার অনুমতি দিলেও মসজিদে সমবেত হওয়ার ব্যাপারে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে। আগামী ২৩ মে পর্যন্ত এই সুবিধা বহাল থাকবে বলে জানা গেছে।
এদিকে আসন্ন ঈদের নামাজ জামাতে পড়া নিয়ে চলছে জল্পনা-কল্পনা। ক্যালগেরির বিএম আইসিসির প্রেসিডেন্ট কাজী রহমান সুজা জানালেন ঈদের জামাত নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি, তবে পরিকল্পনা চলছে। যদি আমরা ঈদের জামাত আদায় করি, তাহলে আলবার্টার নিয়ম মেনেই হয়ত ১৫ জনের জামাতে নামাজ পড়া যাবে।
অন্যদিকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মসজিদগুলো খুলে দেয়ার চিন্তাভাবনা করছে অন্টারিওর প্রভিন্সিয়াল সরকার। এ ব্যাপারেতারা বিভিন্ন মসজিদের পরিচালনা কমিটির প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করতে যাচ্ছে। স্কারবোরো সেন্টারে এমপি সালমা জাহিদ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ভার্চ্যূয়াল এক ইফতার পার্টিতে যোগ দিয়ে এ কথা বলেন।
ইফতার পার্টিতে এক অংশগ্রহনকারী আসন্ন ঈদে মুসলমানদের মাঠে এবং মসজিদে ঈদের নামাজ আদায়ের সুযোগ দেয়া যায় কী না জানতে চাইলে সালমা জাহিদ এমপি ওই তথ্য জানান।
তিনি বলেন, প্রভিন্সিয়াল সরকারের ঘোষিত জরুরি অবস্থা এখনো বহাল আছে। জরুরি অবস্থায়ও কোথাও ৫ জনের বেশি সমাগম করা যায় না। কাজেই এই অবস্থায় ঈদের জামাতের অনুমতি দেয়া হবে বলে তিনি মনে করেন না।
সালমা জাহিদ জানান, সীমিত পরিসরে দোকানপাট খুলে দেয়ার পরিকল্পনার সাথে সাথে মসজিদগুলো খুলে দেয়ার চিন্তাও করা হচ্ছে। তবে কী বিধিব্যবস্থা অনুসরণ করে তা করা হবে তা নিয়ে শিগগিরই মসজিদ কমিটির প্রতিনিধিদের সাথে প্রভিন্সিয়াল সরকার আলোচনা করবে।
অপর দিকে কানাডায় প্রবাসী বাঙালিরা একে অপরের সহযোগিতা এগিয়ে আসছেন। কমিউনিটি লিডাররা খবর নিচ্ছেন, ইমেইলের মাধ্যমে বিভিন্ন তথ্য দিয়ে সচেতন করছেন সবাইকে। ক্যালগেরির কয়েকটি গ্রোসারিস্টল প্রবাসী বাঙ্গালীদের ঘরে গিয়ে অর্ডার ডেলিভারি দিচ্ছে।