নোয়াখালী প্রতিনিধি: নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের ৪ং চরকাঁকড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হানিফ সবুজ ও ইউপি সদস্য শেখ ফরিদ খোকনের ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনার দাবিতে পরিষদের সকল নাগরিক সেবা কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রয়েছে।
এতে করে চরকাঁকড়া ইউনিয়নের প্রবাসী পরিবারসহ সাধারণ সেবা প্রার্থী নাগরিক চরম দুর্ভোগে পড়েছে। ইউপি সদস্যরা বলছে তাদের সিন্ধান্ত বহাল থাকবে। খবর পেয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি ইউনিয়ন কার্যালয় পরিদর্শন করেন।
গতকাল সোমবার (৬ জুন) সন্ধ্যা ৭টার দিকে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সভা থেকে সকল ইউপি সদস্য নাগরিক সেবা কার্যক্রম বন্ধের এ ঘোষণা দেন।
হামলার প্রতিবাদে আয়োজিত সভায় ২নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য (মেম্বার) মো.জামাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মোয়াজ্জেম হোসেন শাহেদ ,৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য দিদার হোসেন সৌরভসহ সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্যরা।
২নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য (মেম্বার) মো.জামাল উদ্দিন বলেন, সভায় সকল ইউপি সদস্য চেয়ারম্যান হানিফ সবুজ (৫০) ও ইউপি সদস্য শেখ ফরিদ খোকনের (৪৫) ওপর হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান। একই সাথে হামলাকারীরা গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত ইউনিয়ন পরিষদের সকল নাগরিক সেবা কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়ে শপথ নেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অপরাধীদের আইনের আওতায় না আনলে আমাদের সিন্ধান্ত বহাল থাকবে। অনেক ইউপি সদস্য হুমকিতে রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ইউপি সদস্য জানান চেয়ারম্যানের উপর হামলাকারীরা কাদের মির্জার অনুসারী হিসেবে পরিচিত। তাদের ভয়ে কেউ এলাকায় মুখ খুলে কথা বলতে সাহস সাহস পায় না।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.সাদেকুর রহমান বলেন, আমি ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় পরিদর্শন করেছি। ইউপি সদস্যরা কার্যালয়ে নেই। এছাড়া অন্যান্য কার্যক্রম সচল রয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। ইউপি সদস্যরা দাবি করছে তাদের সকল কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি এ বিষয়ে ইউএনও এর সাথে কথা বলতে বলেন।
ওসি আরো জানায়, আজ রাত ৮টার দিকে চরকাঁকড়া ইউনিয়ন পরিষদের সকল ইউপি সদস্যদের (মেম্বার) থানায় আসতে বলা হয়েছে। ওই বৈঠকে এ বিষয়ে কথা হবে বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খোরশেদ আলম চৌধুরীর ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।
উল্লেখ্য, হামলার শিকার ইউপি চেয়ারম্যান হানিফ সবুজ অভিযোগ করে বলেন,গতকাল সোমবার (৬ জুন) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার চরকাঁকড়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সীমান্তবর্তী বিল্লা বাড়ির সামনের সড়কে মেয়র আব্দুল কাদের মির্জার অনুসারীরা তাঁর ওপর হামলা চালায়। মো.হানিফ সবুজ (৫০) উপজেলার ৪নং চরকাঁকড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। তিনি সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের অনুসারী। হানিফ সবুজ অভিযোগ করে আরো বলেন,হামলাকারী আওয়ামীলীগ নেতা ফখরুল ইসলাম সবুজ ও ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ওমর ফারুক সবুজ ও তাঁর ভাই রনিসহ প্রদীপ, দুলাল, সাইফুল ইসলাম, লাভলু মেয়র আব্দুল কাদের মির্জার অনুসারী। সোমবার দুপুরে তারা ইউনিয়ন পরিষদের সামনের রাস্তায় ওঁৎ পেতে ছিল। তাদেরকে দেখে আমি উল্টো পথে বাড়ি যাওয়ার পথে বিল্লা বাড়ির সামনে আমার গতিরোধ করে আমার ওপর হকিস্টিক,লোহার রড,হাতুড়ি দিয়ে অতর্কিত আক্রমন চালিয়ে আমার একটি হাত-পা ভেঙ্গে দেয় এবং মাথা ফাটিয়ে দেয় তারা। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কাদের মির্জা অনুসারী আওয়ামীলীগ নেতা মো.ফখরুল ইসলাম সবুজ ও ইউপি সদস্য মো.ওমর ফারুক সবুজ অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে দাবি করেন তারা এ হামলার সঙ্গে জড়িত নেই। অভিযোগের বিষয়ে জানতে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আব্দুল কাদের মির্জার ফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি ফোন রিসভি করেননি।আব্দুল কাদের মির্জা বসুরহাট পৌরসভার মেয়র এবং আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের আপন ছোট ভাই।