করোনা ভাইরাসের প্রভাবে বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশিরা কর্মহীন হয়ে পড়েছে। আর এর প্রভাব পড়ছে রেমিট্যান্সের ওপর। গত তিন মাস ধরে ধারাবাহিকভাবে কমে যাচ্ছে রেমিট্যান্স। গত মার্চ ও এপ্রিলের ধারাবাহিকতায় গত মে মাসেও রেমিট্যান্স প্রবাহের গতি কমে গেছে। গত মে মাসে আগের অর্থবছরের একই মাসের চেয়ে ১৪ শতাংশ কম রেমিট্যান্স এসেছে।
সাধারণত, বছরের যে দুই মাসে ঈদ উদযাপিত হয়, ঐ সময়ে প্রবাসীরা বেশি রেমিট্যান্স পাঠান। তবে এবার তার ব্যতিক্রম হয়েছে। করোনার কারণেই এমন অবস্থা হয়েছে। সামনের মাসগুলোতে এ ধারা অব্যাহত থাকার আশঙ্কা করা হচ্ছে। আর তেমনটা ঘটলে অর্থনীতিতে আরো চাপ তৈরি হবে। কেননা, গত কয়েক মাস ধরে রপ্তানি কমে গেছে। আমদানির পরিমাণও বেশ কয়েকমাস ধরে কমছে। আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের খারাপ অবস্থার মধ্যেও রেমিট্যান্সই ভালো ভূমিকা রাখছিল। বিশেষ করে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা ঘোষণার পরে গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রেমিট্যান্সে প্রবৃদ্ধি ছিল ২০ শতাংশের মতো। এখন তা নেতিবাচক হয়ে গিয়েছে।
করোনা ভাইরাসের প্রভাব বিষয়ে জাতিসংঘ বলছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্ব এমন সংকটে কখনো পড়েনি। এ সংকটে চলতি বছর সারা বিশ্বে রেমিট্যান্স কমবে ২০ শতাংশ। বাংলাদেশে কমবে ২২ শতাংশ। সম্প্রতি ওয়াশিংটন থেকে প্রকাশিত অভিবাসন ও উন্নয়ন নিয়ে বিশ্বব্যাংকের সর্বশেষ রিপোর্টে এমন সতর্কবাণী দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, গত মে মাসে ১৫০ কোটি ৩০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ দাঁড়ায় ১২ হাজার ৭৭৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা। আগের বছরের একই সময়ে এ পরিমাণ ছিল ১৭৪ কোটি ৮১ লাখ ডলার। সে হিসাবে গত বছরের একই মাসের তুলনায় রেমিট্যান্স কমেছে ২৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার, বা ১৪ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ। অবশ্য চলতি বছরের এপ্রিলের তুলনায় ৪১ কোটি ৬৬ লাখ ডলার বেড়েছে। এপ্রিলে ১০৮ কোটি ৬৪ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত দেশে ১ হাজার ৬৩৬ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। আগের বছরের একই সময়ে এসেছিল ১ হাজার ৫০৫ কোটি ডলার। সে হিসাবে মে পর্যন্ত রেমিট্যান্স বেশি আছে ১৩১ কোটি ৩০ লাখ ডলার বা মাত্র ৮ দশমিক ৭২ শতাংশ বেশি রেমিট্যান্স এসেছে।
উৎসঃ দৈনিক ইত্তেফাক