করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সরকার উন্মুক্ত স্থানে জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পর ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত নির্ধারিত কর্মসূচি পুনঃনির্ধারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি, যদিও নতুন কোনো তারিখ জানানো হয়নি।
শুক্রবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে দলের এই সিদ্ধান্তের কথা জানান স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
তিনি বলেন, “আমরা বলেছি, যে বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে, সেই বিধি-নিষেধ অযৌক্তিক ও অকার্য্কর। এটা আমরা বলেছি। কিন্তু তারপরেও জনস্বার্থ এবং প্রাসঙ্গিক সবকিছু বিবেচনা করে আমাদের এই সমাবেশগুলোর তারিখ পুনঃনির্ধারণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
কর্মসূচি পুনঃনির্ধারণকে ‘স্থগিত’ বলা যায় কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমরা বলেছি যে, আমরা তারিখটা পুনঃনির্ধারণ করেছি। আমরা স্থগিত বলিনি। আপনি কী বোঝেন সেটা আপনার ব্যাপার। আমরা যেটা বলার যেটা বলেছি।”
করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনের দাপটে দেশে নতুন করে করোনাভাইরাসে সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়ছে। এক দিনে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা সাড়ে চার মাস পর বৃহস্পতিবার আবার তিন হাজার পেরিয়ে গেছে, তিন মাস পর মৃত্যু বেড়ে ১২ জন হয়েছে।
সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় বৃহস্পতিবার থেকে ১১টি ক্ষেত্রে বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে সরকার। তাতে উন্মুক্ত স্থানে যে কোনো সামাজিক, ধর্মীয় ও রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ বন্ধ রাখার কথা বলা হয়েছে।
এদিকে চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়ার অনুমতির দাবিতে দেশের ৪০ জেলায় ৮ জানুয়ারি থেকে ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত সমাবেশের ঘোষণা রয়েছে বিএনপির। ইতোমধ্যে ৮টি জেলায় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রিজভী বৃহস্পতিবার বলেছিলেন, ওই কর্মসূচি কীভাবে হবে, সে বিষয়ে জ্যেষ্ঠ নেতারা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত দেবেন।
শুক্রবার সেই সিদ্ধান্ত জানিয়ে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনগুলোকে ‘নতুন তারিখে’ সভা-সমাবেশ করার জন্য প্রস্তুতি অব্যাহত রাখার আহবান জানান নজরুল ইসলাম খান।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন হতে পারে, হাটবাজার, দোকান, স্কুল-কলেজ সব খোলা থাকতে পারে। যেখানে বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, উন্মুক্ত স্থানে সংক্রমণের সম্ভাবনা কম, বদ্ধ স্থানে বেশি, সেখানে সরকার বদ্ধ স্থানে অনুমতি দেয়, উন্মুক্ত স্থানে দেয় না। তার মানে খুব…।
“মূল উদ্দেশ্যটা হল আমাদের আন্দোলনের যে কর্মসূচিটা চলছিল সেটাকে তারা প্রথমে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছে নানাভাবে শক্তিপ্রয়োগ করে, ১৪৪ ধারা জারি করে। আপনারা সাংবাদিকরা দেখেছেন সব কিছু।”
বিএনপির এই নেতা বলেন, “আমরা ১৫ দিন আগে চেয়েছি জায়গা, দুইদিন আগে অনুমতি দিয়েছে। পরের দিন হঠাৎ করে তাদের কোনো এক অঙ্গসংগঠন বা তাদের দল একটা চিঠি দিল বা চিঠিও দেয়নি, ফেইসবুকে দিয়েছে। সরকার ১৪৪ ধারা জারি করে দিয়েছে। অর্থাৎ গণতান্ত্রিক অধিকার হরণের যেসব কাজ, সবই করছে তারা। অগণতান্ত্রিক সরকারের পক্ষে এটাই তো স্বাভাবিক।”
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।