করোনা ভাইরাসের চিকিৎসা হিসেবে দেশে শুরু হয়েছে ‘পরোক্ষ এন্টিবডি থেরাপি’ বা ‘প্লাজমা থেরাপি’। বাংলাদেশে এ ধারণাটি প্রথম সামনে নিয়ে আসেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া।
দেশে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. জোয়ারদার রাকিন মনজুর প্রথমবারের মতো প্লাজমা ডোনেট করেন। গত সোমবার ব্লাড ট্রান্সফিউশন তার শরীর থেকে ৮০০ এমএল প্লাজমা সংগ্রহ করেন। এ প্লাজমা বাঁচাতে পারে অন্তত দুজন করোনা রোগীর প্রাণ। এদিকে করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার ৩ যুবকও প্লাজমা দিতে ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
সংবাদে প্রকাশিত ওই শিক্ষকের বরাত দিয়ে বলা হয়, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত থেকে নিরাময় হয়ে উঠা ব্যক্তির ব্লাড-প্লাজমা বা ব্লাড-সিরাম নিয়ে (ভাইরাস ও অন্যান্য ইনফেক্সাস এজেন্ট স্কিনিংয়ের পর) আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে প্রবেশ করালে আক্রান্ত ব্যক্তি খুব তাড়াতাড়ি নিরাময় হয়ে উঠতে পারে। কারণ পূর্বে নিরাময় হয়ে উঠা ব্যক্তির ব্লাড প্লাজমা অথবা সিরামে এন্টি কোভিড-১৯ এন্টিবডি উৎপন্ন হয়ে আছে, যা আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরের প্রবেশ করালে আক্রান্ত ব্যক্তিকে দ্রুত নিরাময়ে দারুণ ভূমিকা রাখবে।
এ বিষয়ে ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া দৈনিক ইত্তেফাককে বলেন, প্লাজমা ধারণাটি সামনে আনার পর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জাতীয় টেকনিক্যাল কমিটির প্রধান প্রফেসর ডা. মো. শহীদুল্লাহ ও সদস্য সচিব প্রফেসর ডা. মীরজাদী সেব্রীনা ফ্লোরা বরাবর একটি ইমেল করেছি ব্লাড- প্লাজমা ব্যবহারের উদ্যোগ নেওয়ার জন্য। একমাস পর ব্লাড-প্লাজমা ব্যবহারের উদ্যোগ গ্রহণ দেখলাম। আরও আগে শুরু করতে পারলে হয়তো অনেক রোগীকে বাঁচানো সম্ভব হতো।
তিনি আরও বলেন, প্রথম থেকেই আমার ধারণা ছিল যে, ভ্যাকসিন ও ওষুধ আবিষ্কার সময় সাপেক্ষ, তাই রোগীর জীবন বাঁচানোর শেষ চেষ্টা হিসেবে ব্লাড-প্লাজমার প্রয়োগ করা যেতে পারে এবং এর ব্যবহারের ফলে সফলতাও পাচ্ছে বিভিন্ন দেশ।
উল্লেখ্য, ব্লাড প্লাজমা বা পরোক্ষ এন্টিবডি থেরাপি হচ্ছে, একজন ব্যক্তির শরীরে উৎপন্ন এন্টিবডি অন্য ব্যক্তির শরীরে প্রবেশ করানো। করোনা ভাইরাস (কভিড-১৯) এ আক্রান্ত হয়ে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠা ব্যক্তির ব্লাড-প্লাজমা আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে প্রয়োগ করলে আক্রান্ত ব্যক্তি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠেন।