কোভিড-১৯ কে ‘সবচেয়ে বাজে দুঃস্বপ্ন’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ অ্যান্থনি ফাউচি। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, ‘এর শেষ কোথায় জানা নেই। আমরা এখনও এর সূচনা পর্বেই আছি।’ মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন-এর প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, মঙ্গলবার বায়োটেকনোলজি ইনোভেশন অর্গানাইজেশন আয়োজিত এক ভিডিও কনফারেন্সে এসব কথা বলেন ফাউচি।
বিশ্বে এখন পর্যন্ত ৭০ লাখের বেশি মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। মৃতের সংখ্যা ৪ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই প্রাণহানি হয়েছে ১ লাখ ১০ হাজারেরও বেশি মানুষের। সংক্রমণের হার বাড়তে থাকলেও যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশই কোয়ারেন্টিন বিধি শিথিল করতে শুরু করেছে।
মঙ্গলবার (৯ জুন) বায়োটেকনোলজি ইনোভেশন অর্গানাইজেশনের কনফারেন্সে ফাউচি বলেন, ‘চার মাস সময়ের মধ্যে এ ভাইরাস গোটা বিশ্বকে বিপর্যস্ত করে দিয়েছে। এ ধ্বংসযজ্ঞ এখনও শেষ হয়নি।’
ফাউচি দাবি করেন, এ ধরনের একটি প্রাদুর্ভাব যে দেখা যাবে তা তিনি জানতেন, তবে এটি যত দ্রুত সময়ে গোটা পৃথিবীতে ছড়িয়েছে তা দেখে বিস্মিত হয়েছেন তিনি। হোয়াইট হাউসের সংক্রামক রোগবিষয়ক এ উপদেষ্টা মনে করেন, ভাইরাসটির উচ্চ সংক্রমণ ক্ষমতা ও আক্রান্ত মানুষদের বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ভ্রমণের কারণে এতো দ্রুত এ রোগ ছড়িয়েছে।
ফাউচির দাবি, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইবোলা ও এইচআইভি এর মতো যেসব জনস্বাস্থ্য সংকট দেখা গেছে তার চেয়ে নতুন করোনাভাইরাস উল্লেখযোগ্যভাবে আলাদা। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি ইবোলা ভয়ঙ্কর ছিল। তবে ইবোলা কখনোই এতো সহজে বিশ্বব্যাপী ছড়াতে পারবে না। এইচআইভির বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ। এটিও একটি ব্যাপক সময়জুড়ে মানুষের মনযোগ কেড়েছিল। আমি মনে করি আমরা এখন যা নিয়ে আলোচনা করছি তার মধ্যে চূড়ান্ত অর্থে এইডস এর প্রভাব অনেক বেশি। কিন্তু এখন করোনাভাইরাস তো গোটা বিশ্বেই ছড়িয়ে পড়েছে।’
কোভিড-১৯ নিয়ে গবেষণা চলছে উল্লেখ করে ফাউচি বলেন, যারা গুরুতর অসুস্থ হওয়ার পরও প্রাণে বেঁচে গেছেন তারা পুরোপুরি সুস্থ হবেন কিনা তা নিয়ে এখনও প্রশ্ন থেকে গেছে। এ রোগটি মানুষের উপর বিচিত্র প্রভাব ফেলছে। আক্রান্তদের কারও কারও মধ্যে কোনও উপসর্গই নেই, আবার কারও কারও ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, স্ট্রোক হচ্ছে, রক্ত জমাট বাঁধাজনিত বৈকল্য দেখা দিচ্ছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, ২ জুন নাগাদ বিশ্বে কোভিড-১৯ এর ১২৪টিরও সম্ভাব্য ভ্যাকসিন নিয়ে গবেষণা চলছে। ফাউচির আশা, এর মধ্যে একাধিক ভ্যাকসিন সফল হবে।