করোনার মহাদুর্যোগের সময়ও দেশে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে চলছে নয়-ছয়। আমদানিকারক সংস্থার নাম জটিলতায় জীবন রক্ষাকারী অক্সিজেনসহ শত কোটি টাকার সরঞ্জাম দশ মাস ধরে পড়ে আছে বিমানবন্দরে।
বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে গঠিত ইমার্জেন্সি রেসপন্স অ্যান্ড প্যানডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস-ইআরপিপি প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ প্রায় পৌনে ৭ হাজার কোটি টাকায় কেনাকাটার নামে শুরু হয় নয়-ছয়। গাড়ির যন্ত্রাংশ তৈরি, ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানসহ নামে-বেনামে ঠিকানাহীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে বরাদ্দ দেওয়া হয় শত কোটি টাকা। ফলাফল পণ্য সররবাহ না করেই টাকা তুলে নেয় অনেক প্রতিষ্ঠান।
গত ১০ মাস ধরে হযরত শাহজালাল বিমান বন্দরে পড়ে আছে এ প্রকল্পের নামে আসা ১০২ কোটি টাকার জীবন রক্ষাকারী চিকিৎসা সামগ্রী। এসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে ১২শ অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর, বিপুল পরিমাণ হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা, পালস অক্সিমিটার, মাস্ক ও পিপিই। ইউনিসেফ সিএমএসডির নামে ভুলে এসব পণ্য পাঠালেও উদ্ধারে কোনো উদ্যোগ নেয়নি ইআরপিপি প্রকল্পের কর্মকর্তারা। ফলে খোয়া গেছে অনেক সামগ্রী, নষ্টও হয়েছে বেশ কিছু।
এ নিয়ে এতদিন কারো কোনো মাথা ব্যাথা ছিল না। আশার কথা হলো, ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে চলতি সপ্তাহে খালাস হয়েছে এসব সামগ্রীর প্রথম চালান। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক গণমাধ্যমকে জানান, এক সপ্তাহের মধ্যে সমস্যার সমাধান হবে।
করোনা মহামারি ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই গত বছর দেশে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার বেহাল দশা নিয়ে নানা প্রশ্ন ওঠে। চিকিৎসকদের সুরক্ষা সামগ্রীর অভাব, জরুরি কেনাকাটার নামে হরিলুটসহ নানা অনিয়ম বের হয়ে আসে একের পর এক। অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ আসার পর এক বছরের মধ্যে ইআরপিপির দুইজন প্রকল্প পরিচালককে এখন পর্যন্ত বদল করতে হয়েছে।