November 21, 2024, 5:51 pm
সর্বশেষ:
১৭ বছর বাড়িতে ঘুমাতে পারিনি: আমির খসরু বান্দরবানে পর্যটকদের বিনোদনে চালু হচ্ছে ছাদখোলা বাস বান্দরবানে দু:স্থ মহিলাদের মধ্যে সেলাই মেশিন ও ভাতা প্রদান শহীদ আব্দুল্লাহর পরিবারকে আর্থিক সহযোগীতা করলেন যশোরের পুলিশ সুপার প্রথমবারের মতো বান্দরবানে শুরু হতে যাচ্ছে মাসব্যাপী ক্রীড়া মেলা কুয়াকাটায় ২৭ ঘন্টা পরে মিললো পাবলিক টয়লেট থেকে এক ব্যক্তির লাশ এসএস পাওয়ার প্ল্যান্ট ইস্যুঃ গন্ডামারা ইউনিয়নের ঐক্যবদ্ধ ছাত্র জনতার মানববন্ধন আলফাডাঙ্গা বাজার বনিক সমিতির সভাপতি নজির মিয়ার মৃত্যুতে স্মরণ সভা ও দোয়া মাহফিল কুয়াকাটায় রাস উৎসবে তীর্থ যাত্রীদের ঢল নেমেছে লোহাগাড়ায় সেনাবাহিনীর অভিযানে মাদকসহ আটক- ৪

করোনার প্রভাব যেন শিশুর মনে গেঁথে না যায়

  • Last update: Saturday, May 2, 2020

করোনাভাইরাস সংক্রমণের আতঙ্ক বদলে দিয়েছে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। ছোট থেকে বড় সবার মধ্যেই কাজ করছে এক ভয়ঙ্কর ভীতি। কি হচ্ছে, কি হবে এমন একটা ভীতিকর অবস্থার মধ্যে আটকে গেছে শিশুর দৈনন্দিন জীবনও। টিনএজ বয়সী শিশুরা বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতে পারছে না, যার বিরূপ প্রভাবের কথা জানান অভিভাবকরা। আর ছোটরা যেখানে যা শুনছে তাতেই প্রভাবিত হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞজনেরা মনে করেন, শিশুর মনোজগতে করোনা দীর্ঘ মেয়াদী নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এতে শিশুর স্বাভাবিক বিকাশ বাঁধাগ্রস্ত হবে। এমন অবস্থায় পরিবারে বড়দের শিশুদের পাশে থেকে কোয়ালিটি সময় দেয়ার পরামর্শদেন তারা। আর মনোবিজ্ঞানী বলছেন নিজে ভালো থেকেই শিশুদেরও ভালো সময় দেওয়া সম্ভব।

মনস্তাত্তিক প্রভাব মুক্ত রাখতে হবে
শিশু অধিকার ফোরামের পরিচালক আবদুছ সহিদ মাহমুদ বলেন, শিশুসহ আমরা এক রকম আতঙ্কের মধ্যে আছি। তবে এই আতঙ্ক যেন শিশুর মধ্যে এমন ভাবে ঢুকিয়ে না দেই যে শিশু বিভ্রান্ত হয়। তাই তাদের সামনে যতটুকু তারা নিতে পারে এতটুকুই আলোচনা করা উচিত । তাদের সাথে বেশি বেশি কথা বলার ওপর জোর দেন এই শিশু অধিকারকর্মী। আর করোনা প্রতিরোধে হাত ধোয়াসহ যে বিষয়গুলো আছে তাতে শিশুদের অভ্যস্ত করে ফেলা, যে খাবারগুলো খেতে বলা হচ্ছে তা খায়ানো এবং খুব বেশি উদ্বিগ্ন হয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতায় প্রভাব ফেলা থেকে বিরত থাকতে বলেন তিনি।

মনে চাপ দেওয়া থেকে বিরত থাকুন
কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন মনে করেন শিশুদের খুব স্বাভাবিকভাবে বোঝাতে হবে, আমরা এ অবস্থা থেকে বের হয়ে আসবো। কোনভাবেই করোনার চাপ তাদের দেওয়া যাবেনা। গল্পের বই পড়া ,ছবি আঁকা,পাঠ্য বই পড়া সবই তাদের রুটিনে রাখতে হবে। তাদের মানসিক চেতনার জায়গাটা থেকে বিচ্ছিন্ন না করে প্রসারিত করতে হবে। মন খারাপ করে বসে থাকা নয় বরং এসময় মানুষে পাশে দাঁড়ানো মনোভাব তৈরি করতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের জ্ঞান-বিজ্ঞানে জগৎ প্রসারিত হবে সব নিয়ন্ত্রণ করবে এমন আশা জাগানো প্রয়োজন।

শরীর র্চচা করবে
শিশুদেও স্কুলে যাওয়া, মাঠে খেলা, ছবি আঁকা, নাচ-গান করা এমন কি পাশের বাড়ির বন্ধুর সাথে মেশাও এখন বন্ধ। আবার একটা রোগের আলোচনা সব মিলিয়ে তাদের মানসিক বিকাশের জায়গাটা বাধাপ্রাপ্ত। বড়দের সেই জায়গা নিতে হবে, মনে করেন মানবাধিকার কর্মী খুশী কবির। শিশুদের গুরুত্ব দিয়ে গল্প করার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই অবস্থায় শিশুর নানা প্রশ্নে বিরক্ত হবেন না। ধৈর্য ধরে তাদের সাথে নিয়ে নিয়মিত শরির চর্চা করুন। এসময় পরিবারিক নির্যাতন বা সহিংসতা বন্ধ রাখুন।

শিশুর যেকোন পরিবেশে অভ্যস্ত হওয়ার ক্ষমতা বড়দের চেয়ে বেশি। তাই এই পরিস্থিতির অভ্যস্ততা থেকে সরিয়ে এই সময়ে তাদের সৃজনী ক্ষমতার বিকাশে জোর দেন অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল। তিনি মনে করেন এই সময় বাবা-মা শিশুর কাছাকাছি আসার সুযোগ পাচ্ছে। তাই এসময়টা ভালভাবে কাটাতে পারলে সম্পর্কটাও দৃঢ় হবে। যন্ত্র নির্ভর যেন না হয়

পরিবারের একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তির মতো আচরণ করা শেখাতে বলেন শিশুবিষয়ক সাংবাদিক নেটওয়ার্ক সভাপতি মাহফুজা জেসমিন। নিজের এগার বছরের চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে মূর্চ্ছনার উদাহরন দিয়ে তিনি বলেন, সে এই সময়টাতে তার কম্পিউটারের নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। বইপড়া, লেখা, হোমওয়ার্ক, অনলাইন ক্লাস, সিনেমা দেখা সবই করতে হচ্ছে কম্পিউটারে। এনিয়ে আমি একটু উদ্বিগ্ন। আমার বাসায় ছাদে যাওয়ার কোনো উপায় নেই। বারান্দায় দাঁড়িয়ে আকাশ দেখারও সুযোগ নেই। তার রান্নায় উৎসাহ আছে তাই আমি তাকে বিভিন্ন রকম রান্নায় সহযোগিতা করা, সুন্দর হাতের লেখার প্র্যাকটিস করানো, ডায়রি লিখে সময় কাটাতে উৎসাহিত করছি।

মনোবিজ্ঞানী যা বলেন
মনোবিজ্ঞানী অধ্যাপক মেহতাব খানম মনে করেন ,সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে মায়েরা একটু বেশিই ট্রেসে আছেন। বাড়িতে কাজের লোক আসছে না, বড়-ছোট সবাই বাড়িতে বলে তার পরিশ্রমও বেড়েছে। তাই মা আগে নিজে ভাল থাকলেই না শিশুকে ভাল রাখতে পারবেন বলে উল্লেখ করেন তিনি। পরামর্শ দেন স্বামীর সাথে আলোচনা করে পরিকল্পনার মাধ্যমে সংকটকালীন সময় পার করার। তিনি মনে করেন স্বামীকেও ঘরের এবং সন্তানদের দেখা-শোনার কাজে সহযোগিতা করা প্রয়োজন। তাহলে স্বামী-স্ত্রী ঝগড়া কম হবে শিশুও এর প্রভাব মুক্ত থাকবে। তিনি বলেন এসময় বা এর পরবর্তী সময়ে পারিবারিক সহিংসতা ডিভোর্স বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। তাই মনে রাখুন পুরোটাই আলোচনা করে নিজেরদের নিয়ন্ত্রণ করুন। টিনএজ বয়সের সন্তানে বড় সম্পদ বন্ধুর শুন্যতা পুরণ করুন। বোঝান বিষয়টা কষ্টের কিন্তু কিছুই করার নেই। এসো দুর্যোগের সময়টা আমরা ক্যারাম, লুডু, দাবা খেলাগুলো চালু করে ভালো সময় কাটাই। নিজেদের শৈশব কৈশরের গল্প যদি তারা শুনতে চায় ,তাই করার পরামর্শ দেন এই মনোবিজ্ঞানী।

Drop your comments:

Please Share This Post in Your Social Media

আরও বাংলা এক্সপ্রেস সংবাদঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© 2023 | Bangla Express Media | All Rights Reserved
With ❤ by Tech Baksho LLC