করোনা ভাইরাস বাতাসেও ছড়াতে পারে-বিশ্বের ২৩৯জন বিজ্ঞানী সোমবার এ দাবি তুলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে তাদের নির্দেশিকা পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়েছিল। তারা বলছেন, করোনা ভাইরাস ছয়ফুট দূরত্বের সীমা ছেড়ে বাতাসের মাধ্যমেও ছড়াতে পারে কর্তৃপক্ষের উচিত এ কথা মেনে নেয়া। এ প্রেক্ষাপটে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মঙ্গলবার বলছে, তারা আগামী কয়েকদিনের মধ্যে নতুন বৈজ্ঞানিক বিবরণ পেশ করবে। বিজ্ঞানীদের এ দাবি তারা পর্যালোচনা করছে।
সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক সংস্থার টেকনিক্যাল প্রধান বেণীদত্ত এলিঘ্রাঞ্জি এক র্ভাচুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, আমরা স্বীকার করছি করোনা বিষয়ে নতুন নতুন তথ্য-প্রমাণ আসছে। তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি এসব বিষয়ে আমাদের উন্মুক্ত থাকতে হবে এবং ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পদ্ধতি ও প্রভাব বুঝে প্রয়োজনীয় সতর্কতা গ্রহণ করতে হবে।
সংস্থার কোভিড- ১৯ বিষয়ক কারিগরী প্রধান মারিয়া ভ্যান কারকোভ বলেন, আগামী কয়েকদিনের মধ্যে আমরা এ সংক্রান্ত বিবরণ পেশ করবো। সেখানে সবকিছুরই উল্লেখ থাকবে। এদিকে এর আগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছিল, বাতাসের মাধ্যমে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পক্ষে যথেষ্ট প্রমাণ নেই।
অক্সফোর্ড একাডেমিক জার্নাল ক্লিনিক্যাল ইনফেকশাস ডিজিজে প্রকাশিত গবেষণাপত্রটিতে লেখকরা বলছেন, সংক্রমিত ব্যক্তির নি:শ্বাস, কথা বলা, কাশি ও হাঁচি থেকে বিভিন্ন ধরণের কণা বাতাসে ছড়ায়। এসব কণা কয়েকঘন্টা বাতাসে ভাসতে পারে এবং বেশ কয়েকমিটার উপরেও ছড়িয়ে থাকতে পারে।
কুইন্সল্যান্ড ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির লিডিয়া মোরাস্কোর নেতৃত্বে গবেষণাপত্রটির লেখকরা বলছেন, শ্বাস-প্রশ্বাস থেকে নির্গত ছোট ছোট ড্রপলেটের মাধ্যমেও করোনা ভাইরাস ছড়াতে পারে। বদ্ধ জায়গার বাতাসেও ভাইরাসটি ছড়াচ্ছে। এর মানে এক কামরায় থাকা অন্যদেরও ভাইরাসটি সংক্রমিত করতে পারে।
তবে গবেষণাপত্রটির সঙ্গে জড়িত ইউনিভার্সিটি অব লীডস এর অধ্যাপক ক্যাথ নোয়াকস বলছেন, এটি হাম কিংবা যক্ষèার জীবাণুর মতো এতো সহজে বাতাসে ছড়ায় না। কিন্তু এটি হুমকিস্বরূপ। এদিকে বিশ্বে করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ১৬ লাখেরও বেশি এবং মারা গেছে ৫ লাখ ৩৮ হাজারেরও বেশি লোক।
সংস্থাটির প্রধান টেডরস আধানম গেব্রিয়াসিস বলেছেন, ভাইরাসের সংক্রমণ কমার কোন লক্ষণই নেই। বরং গত এক সপ্তাহে চার লাখ লোক নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। এটি স্পষ্ট যে আমরা এখনও সংক্রমণের চূড়ায় পৌঁছাইনি।