বেতনবৈষম্য দূর না করে তড়িঘড়ি প্রশাসনিক আদেশ জারি করায় কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছেন বিমানের পাইলটরা।
এ জন্য ৩০ জুলাই সময় দিয়ে বিমানের পরিচালক ফ্লাইট অপারেশনকে (ডিএফও) চিঠি দিয়েছে পাইলটদের সংগঠন বাংলাদেশ পাইলট অ্যাসোসিয়েশন (বাপা)।
সোমবার বাপার সভাপতি ক্যাপ্টেন মাহবুবুর রহমান এই চিঠি দেন। চিঠিতে জানানো হয়, ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে যদি বেতন কর্তনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করা হয় তাহলে তারা এগ্রিমেন্টের বাইরে আর ফ্লাইট অপারেশন করবেন না। আজ এ নিয়ে বাপার নির্বাহী কমিটির জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে। বৈঠকে আন্দোলনের কর্মসূচির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
ফ্লাইট অপারেশন অফিস সূত্রে জানা যায়, যদি পাইলটরা এগ্রিমেন্টের বাইরে ফ্লাইট অপারেশন না করার সিদ্ধান্ত নেন তাহলে বিমানের সবচেয়ে জনপ্রিয় রুট আবুধাবি, দোহা, দাম্মাম ও দুবাই বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
ক্যাপ্টেন মাহবুবুর রহমান বলেন, করোনা মহামারির ক্ষতি পোষাতে ব্যয় সংকোচনে নেওয়া বিমানের সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন কর্তনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হলেও ফ্রন্টলাইনার হিসাবে পাইলটদের বেতন কর্তনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হয়নি। তিনি বলেন, করোনা মহামারির এই দুঃসময়ে পাইলটরা ঝুঁকি নিয়ে ফ্লাইট পরিচালনা করেছেন। এক বছরে ২৫ জন পাইলট করোনা আক্রান্ত হয়েছেন।
এখনো একাধিক পাইলট করোনা পজিটিভ নিয়ে হাসপাতালে রয়েছেন। আটজন পাইলটের পুরো পরিবার করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। ফ্লাইট করে এসে তারা কোয়ারেনটিন করারও সুযোগ পাননি। ফ্লাইট নিয়ে বিদেশে গিয়ে নিজের টাকায় করোনা টেস্ট করতে হয়েছে। তার পরও তাদের বেতন কর্তনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করেনি বিমান। বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্তের কারণে একজন সিনিয়র পাইলটের বেতন সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত কমে গেছে। এটা তাদের প্রতি চরম বৈষম্যমূলক আচরণ।
তিনি বলেন, অ্যাডমিন অর্ডারে বিমানের সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন কর্তনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হয়েছে কিন্তু পাইলটদের করা হয়নি। তিনি আরও বলেন, আজ বাপার নির্বাহী কমিটির বৈঠক হবে। সেখানে আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
মঙ্গলবার বিমানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন কর্তনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার সংক্রান্ত প্রশাসনিক আদেশ জারি করা হয়। জুলাই থেকে এটি কার্যকর করা হবে।
আগের অর্ডারে বেতন ক্রম ৬ থেকে ৮ এর মধ্যে যারা ছিলেন তাদের বেতন ১০ শতাংশ এবং বেতন ক্রম ৯ এর ঊর্ধ্বে যারা ছিলেন তাদের বেতন ১৫ শতাংশ কর্তনের সিদ্ধান্ত ছিল। জুলাই থেকে এটি আর কর্তন করা হবে না।
একই আদেশে বলা হয়েছে ককপিট ক্রুদের (পাইলট) মধ্যে যাদের চাকরির বয়স পাঁচ বছরের মধ্যে তাদের বেতন ১৫ শতাংশ, যাদের বয়স পাঁচ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত তাদের বেতন ২০ শতাংশ এবং যাদের বয়স ১০ বছরের বেশি তাদের বেতন ৪০ শতাংশ কর্তন অব্যাহত থাকবে। বিমানের পরিচালক প্রশাসন জিয়া উদ্দিন আহমেদ স্বাক্ষরিত প্রশাসনিক আদেশে এই ঘোষণা দেওয়া হয়।
উৎসঃ যুগান্তর