জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন ডিআর কঙ্গোতে (ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব দ্য কঙ্গো) প্রতিস্থাপনের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩টি কন্টিনজেন্টের মধ্যে ২০৫ জনের প্রথম দল ঢাকা ত্যাগ করেছে বলে জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর)। সোমবার (১ মার্চ) শান্তিরক্ষা মিশনের প্রথম রোটেশন ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর ত্যাগ করে দলটি। এছাড়া, আগামী ২১ মার্চ, ৯ ও ২৬ এপ্রিল এবং ১৪ ও ৩১ মে আরও ৫টি ফ্লাইটে এক হাজার ৪৪ জন শান্তিরক্ষী ডিআর কঙ্গোর উদ্দেশে যাত্রা করবে।
আইএসপিআর জানায়, শান্তি রক্ষীদের কঙ্গো যাওয়া উপলক্ষে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে যাত্রার প্রাক্কালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ওভারসিজ অপারেশনস পরিদফতরের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মনিরুল ইসলাম আখন্দ জানান, জাতিসংঘের অধীনে শান্তিরক্ষার মহতি কার্যক্রমে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা সফলতার সঙ্গে ৩৩ বছরেরও বেশি সময় অতিক্রম করেছে। শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের বলিষ্ঠ অবদান আজ সর্বমহলে প্রশংসিত এবং সর্বজনস্বীকৃত।
গত ৩১ আগস্ট থেকে বাংলাদেশ পুনরায় শীর্ষস্থানীয় শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশের মর্যাদায় অধিষ্ঠিত হয়েছে। এই গৌরবময় অর্জনের নেপথ্যে রয়েছে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর আন্তরিকতা, ঐকান্তিক প্রচেষ্টা, দক্ষ পেশাদারিত্ব ও মহান আত্মত্যাগ। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী চলমান ৭টি মিশনসহ মোট ৬২টি শান্তিরক্ষা মিশনে সফলতার সঙ্গে শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেছে। এই কার্যক্রমে অদ্যাবধি ৪০৬ জন নারী সেনাসদস্যসহ সর্বমোট এক লাখ ৪১ হাজার ৬০৫ জন সেনাসদস্য অংশগ্রহণ করেছেন।
চলমান কোভিড-১৯ পরিস্থিতির কারণে অন্যান্য শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশের মতো বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের রোটেশন কার্যক্রমও সাময়িকভাবে স্থগিত ছিল। পরবর্তীতে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সময়োপযোগী নির্দেশক্রমে এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় তা পুনরায় চালু হয়েছে। ইতোপূর্বে কন্টিনজেন্টসমূহের বৈদেশিক মিশনে গমনাগমন জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে বিভিন্ন বিদেশি বিমান সংস্থা কর্তৃক পরিচালিত হতো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশক্রমে ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সেনাপ্রধানের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বর্তমানে বাংলাদেশ বিমানের মাধ্যমে রোটেশন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে এবং বৈদেশিক মিশনে গমনকারী প্রতিটি সদস্যকে মিশনে গমনের পূর্বে কোভিড-১৯ এর টিকা প্রদান সম্পন্ন করা হচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলদেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল করেছে।