রিমন মেহেবুব রোহিত, কক্সবাজারঃ কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার একমাত্র ঐতিহ্যবাহী বাজার উখিয়া দারোগা বাজার। উখিয়া উপজেলা সদরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত এই বাজারটি এ অঞ্চলের জন্য যেমন বিখ্যাত তেমনি ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার ও ছিলো চোখে পড়ার মতো। সুদীর্ঘ ৬০/৭০ বছরের পুরোনো এই বাজারটিতে প্রায় সব সময় থাকে ক্রেতা সাধারনের উপচে পড়া ভীড়। কিন্তু লক্ষ্যনীয় বিষয় হচ্ছে হঠাৎ করে বাজারটিতে ধ্বস নামতে শুরু করেছে। হারাতে বসেছে তার দীর্ঘবয়সের ঐতিহ্য! কমতে শুরু করেছে ক্রেতাসহ ব্যবসা বাণিজ্য। এই বাজারটিতে আসা অসংখ্য ক্রেতা ছুটছে কোটবাজারে অবস্থিত বাজারে। বেশির ভাগ ক্রেতা মনে করছেন এই বাজারের তুলনায় কোটবাজারে পণ্যের দাম কম নেয়া হয় এবং যে কোন পণ্য সহজলভ্যে পাওয়া যায়।
যার কারন হিসেবে স্থানীয় অধিকাংশ ক্রেতারা দুষচেন, অপরিষ্কার অপরিচ্ছন্ন বাজার ব্যবস্থা, অতিরিক্ত টোল আদায়, চাঁদাবাজি, পণ্যের ইচ্ছেমতো মূল্য হাকানো সহ, উপ ইজারাদার ও তার বাহিনী কতৃক ক্রেতা সাধারনের উপর কথায় কথায় মারধর, নির্যাতন সহ স্থানীয় প্রশাসনের সঠিক নজরদারী না করাকে।
এখানে উল্ল্যেখ্য যে এক সময়কার ৫ হাজার টাকায় ইজারা দেয়া বাজারটির বর্তমান ইজারা মূল্য দাড়িয়েছে প্রায় দেড় কোটিতে। বাজারের ইজারা মূল্য বাড়লেও বাড়েনি পণ্যের সঠিক মূল্য নির্ধারণ, বাড়েনি সেবা কিন্তু চলছে হাজারো সমস্যা। উপরন্তু প্রায় প্রতিটি পণ্যের মূল্য নিচ্ছে ব্যবসায়ীরা ইচ্ছেমতো। প্রায় প্রতিটি পণ্যের মূল্য কোটবাজার বা কুতুপালং বাজারের তুলনায় দেড়গুন, দুগুন।
পণ্যের এমন দাম নেয়ার বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ক্রেতার কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন বাজারের ইজারাদার ইচ্ছেমতো টোল নেয়। কয়েকজন ব্যবসায়ীকে আবার এমন ও বলতে শোনা গেছে এই বাজারে মালামাল বিক্রি করতে ৩/৪ জনকে টোল দিতে হয়। যার কারনে ক্রেতাশূন্য হচ্ছে বাজার। অনেক কাঁচামাল, মাছ, সবজি, তরিতরকারি সঠিক সময়ে বিক্রি করতে না পারায় পঁচে নষ্ট হয়ে যায়। যে কারনে তাদের বাধ্য হয়ে মূল্য বাড়িয়ে নিতে হয় ক্রেতাদের কাছ থেকে। তবে ক্রেতাদের অভিযোগ নিন্মমানের মালামাল বিক্রি সহ অতিরিক্ত মূল্য হাকিয়ে নেয়া এটা উখিয়া বাজারের নিত্যনৈমত্তিক ব্যপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। কোন দোকানে নেই মূল্য তালিকা। যে কারনে বাজারটি দিন দিন ক্রেতা শূন্য হয়ে পড়ছে। অদুর ভবিষ্যতে এই বাজারটির অস্থিত্ব থাকবে কনা তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন উখিয়ার অধিকাংশ সচেতন মহল। স্থানীয় জনসাধারণ এই ঐতিহ্যবাহী বাজারটি রক্ষায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তর সহ স্থানীয় প্রশাসনের সঠিক নজরদারী আশা করেন।