আবু তালহা, সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার পাইকোশা এলাকায় ব্রিজ নির্মাণের নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও কাজ শেষ হয়নি। এতে প্রতিদিন চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে হাজার হাজার পথচারীদের। জরাজীর্ণ কাঠের সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে স্কুল কলেজের ছাত্র ছাত্রী সহ দুই পারের বাসিন্দারা।
সিরাজগঞ্জ জেলার গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ২০১৯ সালে ব্রিজটি নির্মাণের জন্য ২ কোটি ১৬ লক্ষ ১৯ হাজার ৫৭০ টাকা নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়। ১লা মে ২০১৯ সালে ব্রিজটি নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০২০ সালের ৩০ এপ্রিলের মধ্যে কাজটি শেষ হওয়ার কথা ছিল তবে এখন পর্যন্ত ১ শতাংশ কাজ সম্পন্ন করতে পারেনি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান।
এছাড়াও ব্রিজ নির্মাণের কথা বলে ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দিয়ে কয়েকটি দোকান ভেঙ্গে ফেলা হলেও সংশ্লিষ্টদের দেয়া হয়নি ক্ষতিপূরণ। ব্রিজটি নির্মাণের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের দাবি উভয় পাড়ের লোকজনের বাধা আর নিজস্ব সম্পত্তির ওপর ব্রিজ নির্মাণ হচ্ছে এমন দাবি ও বাধার মুখে নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে। নিরুপায় হয়ে পাইকোশা এলাকার লোকজনের যাতায়াতের সুবিধার্থে কামারখন্দ উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম শহিদুল্লাহ সবুজ দেড় বছর আগে ৯০ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি কাঠের সাঁকো তৈরি করে দেন।
স্থানীয় এলাকাবাসীরা জানান, কামারখন্দ উপজেলার মধ্যে পাইকোশা এলাকা হচ্ছে তাঁত সমৃদ্ধ একটি শিল্প এলাকা। পাইকোশার মধ্য দিয়ে প্রবাহমান এই খালটি পাইকোশা বাজারকে বিভক্তি করেছে এ খালের উপর এর পূর্বে একটি সরু ব্রিজ ছিল সেটি ভেঙ্গে ফেলে নতুন ব্রিজের কাজ শুরু করে। তবে এখন পর্যন্ত কাজ শেষ হয়নি দুই বছর ধরে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী কর্মকর্তারা দের কোন খোঁজ খবর পাচ্ছেনা।
এলাকার সিএনজি, অটোরিকশা চালকেরা জানান, যাত্রী নিয়ে চলাচলের জন্য এ রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে, এতে কয়েক কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে যেতে হয়। এতে সময়ের অপচয় হচ্ছে যাত্রীরাও ভোগান্তিতে পড়ছেন।
পাইকোশা হাট পরিচালনা কমিটির সদস্যরা বলেন,খালের ওপর একটি ব্রিজের অভাবে পাইকোশা বাজারের ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থী,হাটুরে,পথিকসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের নিদারুণ কষ্ট করতে হয়। উপজেলার সবচেয়ে বৃহৎ উল্লেখযোগ্য হাট পাইকোশা। এই এলাকায় স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক-বীমা, এনজিও সংস্থার অফিস রয়েছে। প্রতিদিনের যাতায়াতে হাজার হাজার মানুষ এই কাঠের সাঁকো পার হতে হয়। বহু আগের কাঠের সাঁকো এখন নড়বড়ে হয়ে যাতায়াতের অনুপযোগী হয়ে গেছে। বর্তমানে সেতুটির অবস্থা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। যে কোন সময় সাঁকোটি ভেঙ্গে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
কামারখন্দ উপজেলা চেয়ারম্যান শহিদুল্লাহ সবুজ বলেন, নির্মাণাধীন ব্রিজের দুইপাশের জমি সংক্রান্ত জটিলতা থাকায় ব্রিজের কাজ বন্ধ হয়েছে। তাই প্রায় দেড় বছর আগে উপজেলা পরিষদের অর্থায়নে কাঠের ব্রিজ করে দিয়েছে। বর্তমানে জমি সংক্রান্ত জটিলতা সমাধানের পথে। এলাকাবাসীর দুর্ভোগ লাঘবে অচিরেই ব্রিজের কাজ আবারো শুরু হবে।