আফ্রিকার ঋণগ্রস্ত দরিদ্র রাষ্ট্র সুদানকে ৬৫ কোটি টাকা সহায়তা দিয়েছে বাংলাদেশ। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) আহ্বানে সাড়া দিয়ে এ অর্থ দেয়া হয়। গত মঙ্গলবার এই অর্থ হস্তান্তর করা হয় বলে অর্থ মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এর আগে বাংলাদেশ একই ধরনের সুবিধা দিয়েছিল আফ্রিকার আরেক দেশ সোমালিয়াকেও।
জানা গেছে, আইএমএফ সুদানের কাছে পাবে ৬ হাজার কোটি ডলার। অর্থাৎ বাংলাদেশি মুদ্রায় ৫ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা। এই ঋণ শোধে দেশটির পাশে দাঁড়াতে আইএমএফ তার সব সদস্যকে আহ্বান জানালে কমবেশি সবাই তাতে সাড়া দেয়। বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশও সুদানকে সহযোগিতা করতে রাজি হয়। আইএমএফের আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশ মঙ্গলবার (১৫ই জুন) সুদানকে ৬৫ কোটি টাকার সমান ‘ঋণ মওকুফ’ সুবিধা দিয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সুদান অত্যধিক ঋণগ্রস্ত ও দরিদ্র রাষ্ট্র।
সরকার আশা করে, এ অর্থায়ন দারিদ্র্য বিমোচনে সুদানের সংগ্রামকে আরও শক্তিশালী করবে।
সুদানকে ৬৫ কোটি টাকার সুবিধা দেয়ার এই সিদ্ধান্তের আগে আইএমএফ থেকে একটি চিঠি পায় বাংলাদেশ। চিঠির সূত্র ধরে অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সম্প্রতি একটি সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করা হয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে। অনুমোদিত হওয়ার পর সুদান এবং আইএমএফকে তা জানিয়ে দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের কয়েকজন কর্মকর্তা বিষয়টি ব্যাখ্যা করে জানান, আইএমএফের সদস্য হিসেবে সব দেশেরই হিসাব রয়েছে সংস্থাটিতে। সুবিধা দিতে রাজি হওয়ায় এখন আইএমএফের কাছে সুদানের পুরো ঋণের মধ্যে ৬৫ কোটি টাকা পরিশোধের দায়িত্ব বাংলাদেশের ভাগে থাকবে।
উইকিপিডিয়ার তথ্য অনুযায়ী, ৫৭ সদস্যের ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) সদস্যভুক্ত দেশ সুদান। সুদান একসময় বৃটিশ শাসনের আওতাভুক্ত ছিল। ১৯৫৬ সালের ১লা জানুয়ারি একটি চুক্তির বলে সুদান স্বাধীনতা লাভ করে। সুদানের জনসংখ্যা সাড়ে ৪ কোটি, যার ৭০ শতাংশ মুসলিম। আয়তনে আফ্রিকা মহাদেশে সবচেয়ে বড় ও বিশ্বে দশম দেশ সুদান। এর আয়তন ২৫ লাখ ৫ হাজার ৮১০ বর্গকিলোমিটার। মিসর, ইথিওপিয়া, ইরিত্রিয়া, কেনিয়া, উগান্ডা, কঙ্গো, চাদ ও লিবিয়া হচ্ছে এর প্রতিবেশী।
বর্তমানে দেশটির প্রধান রপ্তানি পণ্য তেল। এ ছাড়া প্রাকৃতিক গ্যাস, সোনা, রুপা, জিপসাম, জিংক, লোহা, সিসা, ইউরেনিয়াম, কপার, গ্রানাইট, নিকেল, তামাসহ গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ দেশ সুদান।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, গত বছর আইএমএফের উদ্যোগের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ৮ কোটি টাকার বেশি অর্থের সমান একই ধরনের সুবিধা দিয়েছিল আফ্রিকার আরেক দেশ সোমালিয়াকে। সেটাও ছিল দারিদ্র্যমুক্তির লক্ষ্যে সোমালিয়াকে দেয়া সুবিধা।