প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভে উত্তাল পাকিস্তান। পদ থেকে সড়ে দাঁড়াতে রোববার (১৮ অক্টোবর) করাচি শহরে ব্যাপক বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীসহ লাখো মানুষ। আন্দোলনকারীদের দাবি, ২০১৮ সালে নির্বাচনের মাধ্যমে সামরিক বাহিনী তাকে অবৈধভাবে ক্ষমতায় বসিয়েছে।
পাকিস্তানের প্রধান ৯টি বিরোধীদলীয় জোট পাকিস্তান ডেমোক্র্যাটিক মুভমেন্ট পিডিএমের ডাকে রাজপথে জনতার ঢল নামে। বিক্ষোভে অংশ নেয়া তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের কন্যা মরিয়ম নওয়াজ অভিযোগ করেন বলেন, ‘আপনি ইমরান খান সাধারণ মানুষের চাকরি কেড়ে নিয়েছেন। মানুষের দু’বেলা যে খাবার পেত তা-ও নষ্ট করে দিয়েছেন। ক্ষুধার্ত অবস্থায় পার করছেন বহু মানুষ।’
এদিকে আন্দোলনে অংশ নেয়া বিলাওয়াল ভুট্টো জানান, ‘আমাদের কৃষকরা কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। ঘরে অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন। আর বিষণ্ণতায় ডুবে আছে যুবসমাজ।’
করাচিতে সমাবেশ করার আগে গত শুক্রবার (১৬ অক্টোবর) দেশটির গুজরানওয়ালা শহরে সমাবেশ করে বিরোধীরা। ইমরান খান ক্ষমতাগ্রহণের পর এটাই সবচেয়ে বড় কোনো সমাবেশ যেখানে তার পদত্যাগের দাবি করা হয় এবং তার সরকার নিয়ে কড়া সমালোচনা করা হয়।
বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী জনমত গড়ে তুলতে পাকিস্তানের ৯টি বিরোধী দল নিয়ে একটি জোট গঠন করেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। জোটের নাম দেয়া হয়েছে পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট (পিডিএম)। দেশটির অর্থনীতিতে বর্তমানে দ্বিগুন মুদ্রাস্ফীতি ও নেতিবাচক প্রবৃদ্ধিসহ নানা অর্থনৈতিক সংকট চলছে। এর জন্য বিরোধীরা বর্তমান সরকারকে এর জন্য দায়ী করে আসছে। ইমরান খানের এই দু’বছরের শাসনামলে সেন্সরশিপ বৃদ্ধি এবং ভিন্নমত, সমালোচক ও বিরোধী নেতাদের বিরুদ্ধে চাপ প্রয়োগের বিষয়টি দৃশ্যমান হয়েছে বলে তারা দাবি করছে। করাচির র্যালিতে অংশ নেয়া ৬৩ বছর বয়সী ফকীর বেলাউচ বলেন, ‘মুদ্রাস্ফীতি গরিব মানুষের কোমর ভেঙে দিয়েছে। অনেকে সন্তানের মুখে খাবার তুলে দিতে অন্যের কাছে হাত পাততে বাধ্য হচ্ছেন। এই সরকারের পদত্যাগ করার এটাই উপযুক্ত সময়।’ এ সময় “যাও ইমরান যাও” বলে বিরোধী সমর্থকদের স্লোগান দিতে দেখা যায়।
পাকিস্তানে পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন আগামী ২০২৩ সালে অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনকে সামনে রেখে বিরোধী সমর্থকরা বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ সমাবেশ করছেন। সামরিক বাহিনীর সমালোচনা করে মরিয়ম নওয়াজ বলেন, ‘আমাদের দল সামরিক বাহিনীর শত্রু নয় কিন্তু আপনি যদি মনে করেন যারা বুট দিয়ে জনগণের ভোট নষ্ট করে তাদের সম্মানিত করবেন তাহলে সেটা কখনোই হতে দেয়া হবে না।’ দিন দিন ইমরান খানের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে হাটছে বিরোধী দলগুলো। এতে বেশ বিপাকে পড়তে পারেন ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।