ইতালিতে বাংলাদেশীদের মধ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে৷ সেই সঙ্গে বিভিন্ন ঘটনায় দেশটির গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে বলে মনে করেন মিলানের বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল ইকবাল আহমেদ৷
মঙ্গলবার ডয়চে ভেলে বাংলা বিভাগের প্রধান খালেদ মুহিউদ্দীনকে ‘ইন্টারন্যাশনাল সিভিল অ্যাভিয়্যাশন অর্গানাইজেশন’ এর ‘নোটিস টু এয়ারম্যান’ এর তথ্যের বরাত দিয়ে ইকবাল আহমেদ বলেন, পাঁচ অক্টোবর পর্যন্ত দেশটিতে বাংলাদেশের ফ্লাইট অবতরণের বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে৷ তবে ইতালির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রাথমিক ঘোষণায় এই মেয়াদ ছিল ১৪ জুলাই পর্যন্ত৷
গত ছয় জুলাই ঢাকা থেকে রোমে অবতরণ করা বাংলাদেশ বিমানের একটি বিশেষ ফ্লাইটের ‘উল্লেখযোগ্য সংখ্যক’ যাত্রীর করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ার কথা জানায় দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়৷ এর প্রেক্ষিতে সাত জুলাই বাংলাদেশ থেকে সব ধরনের ফ্লাইট বাতিলের ঘোষণা আসে৷ পরের দিন শতাধিক বাংলাদেশীকে নিয়ে কাতার এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইট রোমে অবতরণ করে৷ কিন্তু তাদের ফেরত পাঠানো হয়৷
জুনের পর থেকে একাধিক বিশেষ ফ্লাইটে বাংলাদেশীরা ইতালি ফিরলেও তখন তেমন কোনো সমস্যা হয়নি৷ ইকবাল আহমেদ বলেন,‘ছয়টি চার্টার্ড ফ্লাইটে প্রায় ১৬০০ জন বাংলাদেশী এসেছেন৷ ইটালির কর্তৃপক্ষ (এখন) বলছে তাদের সবার তালিকা দিতে হবে৷ তারা ভয়ে আছে, কেননা এদের মধ্যে ১৫০ জনই করোনা আক্রান্ত৷’
ইতালির নিয়ম অনুযায়ী শেঙেনের বা ইউরোপের বাইরে থেকে আগতদের ১৪ দিনের কোয়ারান্টিন বাধ্যতামূলক৷ কিন্তু এই সময়ে স্থানীয় প্রশাসন বাংলাদেশ ফেরতদের খোঁজ নিতে গিয়ে অনেককেই তাদের আবাসিক ঠিকানায় পায়নি বলে জানান ইকবাল আহমেদ৷ ‘কারণ, রেসিডেন্সটা বিমানবন্দরে যেটা ঘোষণা করেছি আমরা বাংলাদেশীরা, সেটা সম্ভবত ঠিকটা করা হয়নি, ভয়ে হোক বা অন্য কোনো কারণেই হোক৷ এটার কারণে আমাদের ইমেজের অনেক সমস্যা হচ্ছে৷ কাল (সোমবার) লাৎসিওতে ২৪ জন আক্রান্ত হয়েছে৷ এর মধ্যে ২০ জনই বাংলাদেশী৷ তাদের সবাই হয় বাংলাদেশ বিমানের ছয়টি ফ্লাইটে এসেছে বা তাদের সংস্পর্শে এসেছে৷ ইটালির গণমাধ্যমগুলো, এমনকি জাতীয় টেলিভিশন চ্যানেলেও এটা বড় করে দেখানো হচ্ছে,’ বলেন তিনি।
বাংলাদেশ থেকে আসা যাত্রীদের সঙ্গে করোনা নেগেটিভ সনদ ছিল কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,‘ইতালি সরকার বলেনি করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট নিয়ে আসতে হবে৷ কিছু লোক স্বপ্রণোদিত হয়ে সার্টিফিকেট নিয়ে এসেছে৷’
বর্তমানে ইতালিতে এক লাখ ৪৫ হাজার বাংলাদেশী বৈধভাবে আছেন৷ মোট কতজন বাংলাদেশী করোনায় আক্রান্ত তার সঠিক তথ্য নেই৷ তবে এখন পর্যন্ত ১১ জন মারা যাওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছেন মিলানের কনস্যুলেট জেনারেল৷ সূত্র : ডয়চে ভেলে