বাংলা এক্সপ্রেস ডেস্কঃ করোনা মহামারিতে বিপর্যস্ত ইতালি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। এ লক্ষ্যে দীর্ঘদিন ধরে জারি থাকা লকডাউন শিথিল হচ্ছে সোমবার থেকে। শুরু হবে বেশ কিছু খাতে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চালু হবে। এতে করে লকডাউন পার করে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে শুরু করবে ইতালি।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ইতালিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ২৮ হাজার ৮৮৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা ২ লাখ ১০ হাজার ৭১৭ জন। লকডাউন শিথিল হলেও রোগীদের বাঁচানোর লড়াই জারি রয়েছে দেশটিতে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। এখন পর্যন্ত তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে সুস্থ হয়েছেন ৮১ হাজার ৬৫৪ জন।
গত কয়েকদিন ধরেই ইতালিতে করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের হারও কমেছে এবং বেড়েছে সুস্থতার সংখ্যা। দেশটিতে করোনার তাণ্ডব দুর্বল হতে থাকায় লকডাউন শিথিল করছে ইতালি সরকার। দেশটির প্রধানমন্ত্রী জুসেপ্পে কন্তের পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী দেশটিতে সোমবার থেকে লকডাউন শিথিল করা হয়েছে।
সোমবার থেকে উৎপাদন শিল্প, নির্মাণ খাত ও পাইকারি দোকান পুনরায় চালুর প্রক্রিয়া শুরু হতে যাচ্ছে ইতালিতে। তবে আপাতত সীমিত আকারে খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার। ইতালির বার, রেস্টুরেন্ট, খুচরা ও পাইকারি দোকানপাট, স্টেশনারি, বইয়ের দোকান, বাচ্চাদের কাপড়ের দোকান, কম্পিউটার ও কাগজপত্র তৈরির কাজ শুরুর অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
ইতালি সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী,১৮ মে থেকে বাণিজ্যিক কিছু অংশ, প্রদর্শনী, জাদুঘর, প্রশিক্ষণ টিম, ক্রীড়া ক্ষেত্র এবং গ্রন্থাগার খোলার ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া ১ জুন থেকে রেস্তোরাঁ, বার, সেলুন, ম্যাসেজ সেন্টার খোলা হবে।
ইতালিতে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলো আগামী সেপ্টেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে খোলার কথা রয়েছে।
লকডাউন শিথিল করা হলেও কোভিড-১৯ এর প্রকোপ পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত সবাইকে গণপরিবহসহ বাসার বাইরে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে এবং নিরাপদ সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে হবে।
বাসার বাইরে বের হওয়ার কারণ কর্তৃপক্ষের কাছে অবশ্যই জানাতে হবে। অনুর্ধ ১৮ বছর বয়সীরা লিগ্যাল গার্ডিয়ানের সঙ্গে বের হওয়ার সুযোগ পাবেন। এতে শুধু পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা যাবে। পারিবারিক বড় অনুষ্ঠান অথবা পূর্ণমিলনি করা যাবে না। খাবার, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস ক্রয়, চিকিৎসকের সাক্ষাৎ এবং ফার্মেসিতে যাওয়া যাবে।
নিজ এলাকার লেক, সমুদ্র সৈকত এবং পর্বতমালায় ভ্রমণ ও নিজস্ব এলাকায় হাঁটা, দৌড়ানো এবং সাইক্লিংয়ের অনুমতি আছে। তবে একত্রে বেশি লোক সমাগম করা যাবে না। সবাইকে কমপক্ষে এক মিটার দূরত্বে অবস্থান করতে হবে।
পুরোপুরি নির্মূল না হওয়ার পরও লকডাউন শিথিলের ঘোষণায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দেশটির বিরোধী দলের কয়েকজন নেতা। এ নিয়ে সরকার ও বিরোধী দলে বিতর্ক চলছে। সরকার বলছে, করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতিকে সচল করতেই লকডাউন শিথিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।