প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দক্ষিণ আফ্রিকায় তার সাম্প্রতিক সফরের ফলাফল নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ইউনূসের আত্মসম্মান নেই বলে বিবৃতি ভিক্ষা করছেন। যারা বিবৃতি দিয়েছেন তারা লোক পাঠাক আমি আহবান করঠি তারা এসে দেখুক তিনি কি করেছেন৷
মঙ্গলবার বিকালে গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
আত্মবিশ্বাস থাকলে ড. ইউনূস আন্তর্জাতিক বিবৃতি ভিক্ষা করে বেড়াতেন না বলে জানি শেখ হাসিনা বলেন, সরকার কোনো বিবৃতিতে প্রভাবিত হবে না। ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলা আইন অনুযায়ী চলবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা বিবৃতি দিয়েছেন তাদের আহ্বান জানাই, বিবৃতি না দিয়ে বিশেষজ্ঞ পাঠান, আইনজীবী পাঠান। দলিল দস্তাবেজ, কাজগপত্র ঘেঁটে দেখুন অন্যায় আছে কি না। সব কিছুই আইন মতো চলে।
কেউ যদি ট্যাক্স (কর) না দেয় আর যদি শ্রমিকের অর্থ আত্নসাৎ করে, শ্রমিকদের পক্ষ থেকে যদি মামলা করা হয়। আমাদের কী সেই হাত আছে যে মামলা বন্ধ করে দেব? প্রশ্ন করেন প্রধানমন্ত্রী।
নোবেলজয়ী বলে কি ব্যবস্থা নেওয়া হবে না? এমন প্রশ্ন রেখে শেখ হাসিনা বলেন, পৃথিবীতে এমন বহু নোবেল বিজয়ী আছেন, পরবর্তী তাদের কাজের জন্য কারাগারে আছেন (যেতে হয়েছে)। আদালত স্বাধীনভাবে চলবে।
ভয় পেলে চলবে না। শ্রমিকদের পাওনা তাদের দিতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমরা দেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন করেছি। মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে। সেইসঙ্গে আমাদের সরকারের আমলে মানুষের গড় আয়ুও বেড়েছে। আমরা উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের মানুষকে অভিশাপমুক্ত করেছি।
প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক দক্ষিণ আফ্রিকা সফর সম্পর্কে অবহিত করতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
ব্রিকস সম্মেলনে অংশ নেওয়ার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিষেধাজ্ঞা ও পালটা নিষেধাজ্ঞা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। এ বিষয়গুলো আমি সম্মেলনে তুলে ধরেছি।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, দক্ষিণের দেশসমূহের উপর আরোপিত সিদ্ধান্ত, বিভাজনের নীতিকে না বলার এখনই সময়। সর্বজনীন নিয়ম ও মূল্যবোধকে অস্ত্রে পরিণত করার প্রচেষ্টাকে অবশ্যই প্রত্যাখ্যান করতে হবে। আমাদের নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার চক্র বন্ধ করতে হবে।
তিনি বলেন, সব ধরনের হুমকি, উসকানি ও যুদ্ধের বিরুদ্ধে কথা বলার উপর গুরুত্ব দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, দক্ষিণের দেশসমূহের উপর আরোপিত কৃত্রিম সিদ্ধান্তের কারণে আর ক্ষতিগ্রস্ত হতে রাজি নই। সর্বজনীন নিয়মের নামে আমাদের উপর চাপিয়ে দেওয়া অসম নীতিকে প্রত্যাখ্যান করার জন্য আমি দক্ষিণের দেশসমূহকে আহ্বান জানিয়েছি।
সফরের মূল আলোচনার বাইরে ইন্দোনেশিয়া, বেলারুশসহ বিভিন্ন দেশের সরকারপ্রধানের সঙ্গে আলোচনা হওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের এই সফরটা অত্যন্ত ফলপ্রসূ ছিল বাংলাদেশের জন্য। যখন সারাবিশ্ব স্যাংশন, কাউন্টার স্যাংশনের নামে নানা ঝামেলায়, সেখানে একটা নতুন দুয়ার খুলে গেছে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য সবকিছু সম্প্রসারণ করার জন্য সেটাই আমি মনে করি।
বিপদজনক অস্ত্র প্রতিযোগিতায় সম্পদ অপচয় না করে বিশ্বব্যাপী জনসাধারণের জন্য পণ্য ও পরিষেবা প্রদানের জন্য আহ্বান সম্মেলনে জানানো হয়েছে বলে জানান শেখ হাসিনা।
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাপোসারের আমন্ত্রণে ২২ থেকে ২৪ আগস্ট জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠিত ১৫তম ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেন শেখ হাসিনা। সম্মেলন শেষে গত রোববার তিনি দেশে ফিরেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী এবং ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা উপস্থিত রয়েছেন।