ভারতের বিজেপিশাসিত আসামে সরকারি মাদ্রাসা বন্ধের সিদ্ধান্ত কার্যত চূড়ান্ত হয়েছে। বুধবার (৭ অক্টোবর) রাজ্যের মধ্য শিক্ষা বিভাগের উপসচিব এস এন দাস মধ্য শিক্ষা বিভাগের ডিরেক্টরের কাছে চিঠি দিয়ে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।
তবে, ক্ষমতায় এলে এ সিদ্ধান্ত বাতিল করে সব মাদ্রাসা চালু করার ঘোষণা দিয়েছেন রাজ্যে কংগ্রেসের বড় শরীক অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (এআইইউডিএফ)। আসামের শিক্ষা মন্ত্রণালয় সরকারি মাদ্রাসাগুলো বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এজন্য ১৪৮ জন চুক্তিভিত্তিক মাদ্রাসা শিক্ষককে মধ্য শিক্ষার অধীনস্থ সাধারণ স্কুলগুলোতে বদলি করা হবে।
আসামের শিক্ষামন্ত্রী ও বিজেপি নেতা ড. হিমন্তবিশ্ব শর্মা বলেছেন, রাজ্যের সরকারি মাদ্রাসাগুলো বন্ধ হবেই। তাঁর মতে ‘রাজ্য বিধানসভাতেও বিষয়টি তোলা হয়েছে। সরকারের অবস্থান স্পষ্ট, সরকারি খরচে ধর্মীয় শিক্ষা নয়। ব্যক্তিগত খরচে মাদ্রাসা চলতেই পারে, এটা সরকারের দেখার বিষয় হতে পারে না। কিন্তু ধর্মগ্রন্থের পাঠ নেওয়া হবে সরকারের টাকায়, এই পরম্পরা আমরা বন্ধ করবই।’
আগামী নভেম্বরে ওই বিষয়ে সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে বলে শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন। যদিও আগেভাগেই এব্যাপারে মধ্য শিক্ষা বিভাগের তৎপরতা শুরু হয়েছে। এ প্রসঙ্গে এআইইউডিএফ প্রধান মাওলানা বদরউদ্দিন আজমল বৃহস্পতিবার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেছেন, সরকার এখন যে সিদ্ধান্তই নিক, ক্ষমতায় এলে তাঁরা সব সরকারি মাদ্রাসা খুলে দেবেন। মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থা শতাব্দী প্রাচীন বলে মন্তব্য করে তাঁরা সরকারি সিদ্ধান্তকে আদালতে চ্যালেঞ্জ জানাতে প্রস্তুত বলেও মন্তব্য করেছেন। এতেও কাজ না হলে ক্ষমতায় এলেই ক্যাবিনেটে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে সব সরকারি মাদ্রাসা খুলে দেওয়া হবে বলেন আজমল।
মাওলানা বদরউদ্দিন আজমলের এআইইউডিএফ দল রাজ্যে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করেছে। বিজেপিবিরোধী মহাজোট রাজ্যে ক্ষমতায় এলে কংগ্রেসের কেউ মুখ্যমন্ত্রী হবেন বলে এআইইউডিএফ প্রধান জানিয়েছেন। তিনি বা এআইইউডিএফের কেউ মুখ্যমন্ত্রী হবেন না বলেও স্পষ্ট করেছেন আজমল।
রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ড. হিমন্ত বিশ্বশর্মাকে কটাক্ষ করে আজমল বলেন, ‘চোখ বুজলেই ‘মুখ্যমন্ত্রী পদে’ আমাকে দেখেন হিমন্ত। আসলে হিমন্ত তো মুখ্যমন্ত্রী হতে পারবেন না। সেজন্য আমাকে নিয়ে অনেক কথাই বলে থাকেন। ‘রাজ্যের সংখ্যালঘুদের মুরগির মতো পুষছে এখন বিজেপি। সময় এলেই কাটবে’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সম্প্রতি শিবসাগরে আসামের শিক্ষামন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা এবারের নির্বাচনকে ‘সভ্যতার যুদ্ধ’ বলে অভিহিত করে শরীরের শেষ রক্তবিন্দু থাকা পর্যন্ত দিসপুরের ক্ষমতায় আজমলকে কোনোদিন ক্ষমতায় বসতে দেওয়া হবে না বলে সংকল্প গ্রহণ করেছেন।