মোঃ রাসেল ইসলাম, যশোর জেলা প্রতিনিধি:
সুপার সাইক্লোন আম্পান করোনা পরিস্থিতির মধ্যে অধিক শক্তিশালী হয়ে লন্ড ভন্ড করে দিয়েছে জনজীবন। বাড়িঘর উড়িয়ে করেছে নিরাশ্রয়। বেনাপোল পৌরসভা সহ শার্শা উপজেলায় হাজার হাজার মানুষ এখন খোলা আকাশের নীচে মানবতার জীবন যাপন করছে। এখনো আসেনি সাহায্যর কোন ত্রান সামগ্রী। বিশেষ করে বস্তিবাসী খোলা আকাশের নীচে ট্রেন লাইনে রাত কাটাচ্ছে। রোদ বৃষ্টি বয়ে চলেছে তাদের শরীরের উপর দিয়ে।
ঈদের আনন্দ ও তাদের ধুলোয় মিশে দিয়েছে। একদিকে করোনা আতঙ্কে কর্মহীন মানুষ ঘরবন্দী হয়ে আছে। অন্যদিকে আম্ফামের মত এত বড় ঝড় বয়ে যাওয়ায় মানুষ হতাশ হয়ে পড়েছে। বেনাপোল ভবেরবেড় রেলের বস্তিতে বসবাসরত মানুষের ঘর বাড়ি উড়িয়ে বাড়ি হারা করেছে হাজার হাজার মানুষের। সেই সাথে শাহিন নামে একজনের প্রান ও কেড়ে নিয়েছে। এসব খবরে বেনাপোল পৌর মেয়র জরুরী ভিত্তিতে সেখানে ঈদ উপহার সামগ্রী ও খাদ্য সামগ্রী পাঠিয়েছিল। কিন্তু এসব মানুষের খাদ্র্যের পাশাপাশি প্রয়োজন হয়ে পড়েছে গৃহ নির্মানের। হাতে টাকা নেই, করোনার জন্য কাজ নেই। ছোট ছেলে মেয়ে ও বৃদ্ধ বাবা মাকে নিয়ে পড়েছে বিপাকে এসব পরিবারের গৃহকর্তারা।
এসব মানুষের পালিত হাস মুরগী গরু ছাগল ও হয়ে পড়েছে বাসস্থান শুন্য। এসব পশুপাখি ও খাদেও অভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে।
ঝড় আম্পামের এর আঘাতে বেনাপোল পৌর সভার প্রতিটি গ্রাম সহ শার্শা উপজেলার ও ১৮২ টি গ্রামের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে হাজার কোটি টাকার উপরে। এই উপজেলার প্রায় গ্রামে আছে গরুর খামার। আছে আম চাষ। শত শত বিঘা আম ও লেবু চাষীদের লেবু পড়ে গাছতলায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কেউ নেই এসব কাঁচা আম নেওয়ার। বাজারে ও নেই কাঁচা আমের চাহিদা। গরু, আম ও লেবু চাষী পুটখালী গ্রামের নাসির উদ্দিন বলেন আমার প্রায় কোটি টাকার উপরে ক্ষতি হয়েছে। ৩০ বিঘা জমির আম, ৮ বিঘা জমির লেবু ও ৬টি গরুর খামার ঝড়ে ভেঙ্গে দুমড়ে মুচড়ে গেছে। কয়েকটি গরুর পা ভেঙ্গে গেছে। সব মিলিয়ে কোটি টাকার মত ক্ষতি হয়েছে।
বেনাপোল পৌর সভার ভবারবেড় গ্রামের খায়রুন নাহার, সুফিয়া বেগম, পিক্কা খান, রাবেয়া বেগম তরিকুল ইসলাম বলেন আমাদের ঘরে কিছু নেই। এমটি সরকারী ট্রেন লাইনের পাশে ঘর। সেখানে ছোট ছোট ঘর বেধে আমরা বসবাস করি পরিবার পরিজন নিয়ে। ঝড়ে ঘরের সাথে প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র ও উড়িয়ে নিয়ে এলোমেলো করে ফেলেছে। আমরা এখন ট্রেন লাইনের উপর রাত কাটাচ্ছি। বৃষ্টি রোদ সব কিছু আমাদের গায়ের উপর দিয়ে বয়ে গেছে।
আওয়ামীলীগ নেতা আছাদুজ্জামান আছাদ সাহায্যের আশ্বাস দিয়ে তাদের নাম ও ভোটার আইডি কার্ড নিয়ে গেছে বলে তারা জানান। তবে এই ওয়ার্ডের কাউন্সিলার জ্যোস্নাকে কোন খোজ নিতে দেখা যায়নি বলে তারা জানান।
ছলিমন নামে ভবেরবেড় বস্তির একজন ভিক্ষুক বলেন আমাদের থাকার জায়গার ব্যবসস্থা করে দিলে আমরা খুশি। আমরা খুব কষ্টে দিন যাপন করছি।