আব্দুল্লাহ আল শাহীন, ইউএইঃ সিলেটের মোহাম্মদ আবুল কালাম গত ৩ মাস পূর্বে আমিরাতে এসেছেন। প্রথমে এক মাসের ভিজিট ভিসা নিয়ে আমিরাতে প্রবেশ করেন। ভ্রমণ ভিসায় আসলেও উদ্দেশ্য হচ্ছে, কাজের সন্ধান করে ভিসা লাগানো। আবুল কালাম প্রথম এক মাসে কাজের কোন সন্ধান করতে না পেরে ভিজিট ভিসার মেয়াদ তিন মাস বাড়ান।
সেই তিন মাসেও কাজের সন্ধান করতে না পেরে আবারও যখন মেয়াদ বাড়াতে যান তখন বিপত্তি ঘটে। ট্রাভেল কর্তৃপক্ষ জানায়, ইতোমধ্যে তিনি আমিরাতের ব্ল্যাক লিস্টে আছেন পাশাপাশি তাঁর নামে ৬ হাজার দিরহাম জরিমানা রয়েছে।
এটা কিভাবে সম্ভব? যেখানে আবুল কালাম বৈধভাবে আমিরাতে প্রবেশ করলেন এবং বৈধ ভিসার মেয়াদ আবার বাড়ালেন তাহলে ব্ল্যাক লিস্ট কেন হলেন? জরিমানাই-বা আসলো কেন?
এব্যাপারে আজমনস্থ আল মানামা ম্যান পাওয়ার সার্ভিসের কনসালটেন্ট মোহাম্মদ কামাল হোসেন বাংলা এক্সপ্রেসকে বলেন, ভিজিট ভিসার মেয়াদ এক মাস করে দুই বার বাড়ানো যায়। তিনি এক মাস করে না বাড়িয়ে তিন মাসের নতুন ভিজিট ভিসা করেছেন। এই ব্ল্যাক লিস্টের কারণ লোকটির ভিসা বি টু বি হয় নি। একসময় আমিরাতে অভ্যন্তরীণ ভিজিট ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর পূর্বশর্ত ছিল A to A (বিমানবন্দর থেকে বিমানবন্দর) দেশ আউট। করোনাকালীন সময়ে তা শিথিল করে অনলাইনে বি টু বি বা ইনসাইড কান্ট্রি করা হয়েছে অর্থাৎ আমিরাতে অবস্থান করেও মেয়াদ বাড়ানো যাবে তবে তা অনলাইন প্রসেস সম্পন্ন করতে হবে। আগের ভিজিট ভিসার স্ট্যাটাস পরিবর্তন করে নতুন ভিসায় আনতে হয়।
তিনি আরও বলেন, যখন ভিজিট ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর জন্য যাবেন তখন অবশ্যই প্রথম যে এজেন্সি থেকে ভিজিট ভিসা করা হয়েছিল সেখানেই যেতেভহবে। দুই বার বাড়ানোর পরেও যদি ভিজিট ভিসার প্রয়োজন হয় তখন যেকোনো এজেন্সি থেকে নতুন অভ্যন্তরীণ ভিজিট ভিসা গ্রহণ করা যাবে। তবে তাদের বলতে হবে ইন আউটের প্রসেস ও স্ট্যাটাস পরিবর্তন করে দেওয়ার জন্য। অভ্যন্তরীণ ভিজিট ভিসার জন্য ৬০০ দিরহাম অতিরিক্ত দিয়ে এই প্রসেস সম্পন্ন করতে হয়। তা না করলে ব্ল্যাক লিস্টের পাশাপাশি প্রতিদিন জরিমানা ১০০ দিরহাম (২ হাজার টাকা) করা হবে। ব্ল্যাক লিস্টের ফলে জরিমানা পরিশোধ ও ব্ল্যাক লিস্ট উঠানো ছাড়া ভিসা লাগানো দূরে থাক দেশে যাওয়াও সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, ‘ব্ল্যাক লিস্ট উঠানোর জন্য দেশে থাকাকালীন আমিরাতের যে এজেন্সি থেকে ভিজিট গ্রহণ করা হয়েছিল তাদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে। কারণ তারাই ব্ল্যাক লিস্টে ফেলেছে। তারপর Sharjah airport travel agency (SATA) অফিসে গিয়ে নির্ধারিত ফি দিয়ে আবেদন করতে হবে। সাথে সকল ডকুমেন্টস নিয়ে যেতে হবে।’
এদিকে সম্প্রতি আমিরাতে ভিজিট ভিসায় আগত প্রবাসীরা বাংলাদেশি দালালদের মাধ্যমে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। ভিজিট ভিসা দিয়ে ওয়ার্ক পারমিট বলে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। অনেকে আবার চাকুরি দেওয়ার কথা বলে নতুন প্রবাসীদের সাথে প্রতারণা করছে।