আফগানিস্তানের তালেবানের কালচারাল কমিশনের সদস্য আহমদুল্লাহ ওয়াসিক জানিয়েছেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতে আশ্রয় নেয়া সাবেক আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি ও তার সহযোগীদের দেশটিতে বসে রাজনৈতিক তৎপরতায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে আবুধাবি। রোববার এক টুইটবার্তায় এই কথা জানান তিনি।
তবে আশরাফ গনি ও তার সহযোগীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাত কর্তৃপক্ষের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
টুইটবার্তায় আহমদুল্লাহ ওয়াসিক বলেন, ‘সংযুক্ত আরব আমিরাত আশরাফ গনি প্রশাসনের সকল কর্মকর্তার রাজনৈতিক তৎপরতার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যারা দুবাই ও অন্য শহরগুলোতে বাস করছেন।’
এই নিষেধাজ্ঞায় আশরাফ গনি ও তার দুই সহযোগী আতা মোহাম্মদ নুর ও হামদু্ল্লাহ মুহিবও রয়েছেন বলে টুইটবার্তায় জানান ওয়াসিক।
এদিকে তালেবানের মুখপাত্র ইনামুল্লাহ সামানগানি বলেছেন, এই বিষয়ে তালেবান ও আমিরাতের সরকারের মধ্যে সরাসরি কোনো আলাপ হয়নি।
তিনি বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে বিশ্বের দেশগুলো অনুধাবন করতে পেরেছে যে আফগানিস্তানে কিভাবে অগ্রসর হতে হবে এবং তারা তাদের দেশে কাউকেই রাজনৈতিক তৎপরতা চালানোর অনুমতি দেবে না। কিন্তু এই বিষয়ে আমিরাত আমাদের এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি।’
এদিকে আশরাফ গনির ভাই হাশমত গনি এই নিষেধাজ্ঞার কথা অস্বীকার করেছেন।
তিনি বলেন, ‘সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাস করা রাজনীতিবিদদের প্রতি দেশটির নীতি হচ্ছে, এটি কাউকে রাজনৈতিক তৎপরতায় যুক্ত থাকার অনুমতি দেয় না। এই ব্যবস্থা শুধু প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনির জন্যই নয়। বেনজির ভুট্টো ও থাইল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ওপরও এই ব্যবস্থা চালু হয়েছিলো।’
২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে কাতারের দোহায় তালেবানের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের শান্তিচুক্তির শর্ত অনুসারে আফগানিস্তানে শান্তি স্থাপনে ক্ষমতাসীন সরকারের সাথে সমঝোতার চেষ্টা শুরু করে তালেবান। কিন্তু সমঝোতা না হওয়ার জেরে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন নেতৃত্বের বহুজাতিক বাহিনীর প্রত্যাহারের মধ্যেই দেশটির নিয়ন্ত্রণ নিতে থাকে তালেবান।
চলতি বছরের আগস্টে পুরো দেশের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে রাজধানী কাবুল পৌঁছে যায় তালেবান যোদ্ধারা। কাবুলের সীমানায় দাঁড়িয়ে তালেবান সরকারের সাথে সমঝোতার জন্য চেষ্টা চালায়। কিন্তু ক্ষমতাসীন আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি দেশটিতে শান্তি স্থাপনে সমঝোতা প্রত্যাখ্যান করে ১৫ আগস্ট কাবুল ছেড়ে পালানোর পর প্রশাসনিক শৃঙ্খলা রক্ষায় রাজধানীতে প্রবেশ করে তালেবান যোদ্ধারা।
আশরাফ গনি শুরুতে তাজিকিস্তান পালিয়েছেন বলে খবর পাওয়া যায়। পরে সংযুক্ত আরব আমিরাতে আশ্রয় নেয়ার কথা জানান আফগানিস্তানের সাবেক এই প্রেসিডেন্ট।
সূত্র : তোলো নিউজ