মামুনুর রশীদঃ সংযুক্ত আরব আমিরাতের ট্যাক্সি কোম্পানিকে বাংলাদেশে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালুর আহ্বান জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমদ। দেশের যেকোনো প্রান্তে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালু করলে বাংলাদেশ সরকার সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।
রবিবার বাংলাদেশ কন্সুলেট দুবাই ও বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল দুবাইয়ের যৌথ আয়োজনে আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আবু জাফরের সভাপতিত্বে ও দুবাই কনস্যুলেটের প্রথম সচিব (লেবার) ফকির মনোয়ার হোসেনের সঞ্চালনায় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এই আহ্বান জানান।
মতবিনিময় সভায় অংশ নেন কনসাল জেনারেল মোহাম্মদ বিএম জামাল হোসেন, বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল দুবাইয়ের সভাপতি মাহতাবুর রহমান, এমিরেটস ফ্যাসিলিটি ম্যানেজমেন্টের কর্মকর্তা মোহাম্মদ খামিস, এরাবিয়ান হোল্ডিং ট্যাক্সির ব্যবস্থাপনা পরিষদের মানসুরসহ দেশি-বিদেশি একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক, সাংবাদিক, দূতাবাস ও কনস্যুলেটের কর্মকর্তা।
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমদ আরব আমিরাতে বাংলাদেশির আগমন, কর্মীর দক্ষতা, কর্মীর স্বাস্থ্যসেবা, কাজের নিশ্চয়তা, নিরাপত্তা ও সর্বোপরি দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বলের বিষয়ে বেশ খোলামেলা আলোচনা করেন।
তিনি বলেন, আমিরাতের ব্যবসায়ীরা বিনামূল্যে ভিসা দিলেও কথিত দালালরা মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে দেশ থেকে লোক আনে যা অন্যায়। এসব দালালদের বিষয়ে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। দালাল ছাড়া কর্মী আনতে এরাবিয়ান ট্যাক্সি কোম্পানিকে বাংলাদেশ থেকে সরাসরি নিয়োগ দেয়ার আহ্বান জানান। তিনি বললেন, চালকের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালু করুন। প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের জন্য আপনাদের শুধু লোক যাবে কেন্দ্রসহ সকল বাকি সব সহযোগিতা সরকার করবে। আমিরাতে বাম দিকে আর বাংলাদেশে ডান দিকে চালকের সিট থাকায় কিছুটা ব্যতিক্রম হয়ে যায়। এসবের সমাধানে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র যথাযথ ভুমিকা রাখতে পারবে।
বিমান ভাড়ার ব্যাপারে প্রশ্ন উঠলে মন্ত্রী বলেন, আমরাও চাই কম খরচে কর্মীরা বিদেশ আসুক। আমাদের সঙ্গে প্রবাসীরাও ঐক্যবদ্ধভাবে দাবি তোলা জরুরি। বাংলাদেশ বিমানের উচিৎ প্রবাসীদের সহযোগিতা করা।
দেশে বিনামূল্যে লাশ পাঠানোর ব্যাপারে মন্ত্রী বলেন, গত এক বছরে দুবাই থেকে ৪০ ও আবুধাবি থেকে ২০টি লাশ বিনামূল্যে পাঠানো হয়েছে। তবে সকল লাশ পাঠানোর ব্যাপারেও আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এসময় ইমরান আহমদ বলেন, ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের সদস্য হলে লাশের পুরো টাকা না হলেও আংশিক কিছু টাকা পাওয়া যায়। এই সদস্যরা দেশে লাশ পৌছা মাত্র ৩৫ হাজার ও পরবর্তীতে ৩ লাখ টাকা মৃত প্রবাসীর পরিবার পায়। এছাড়া প্রবাসীদের সহজ কিস্তিতে ঋণ প্রদান করা হয়। তাই সকল প্রবাসীকে ওয়েজ আনার্স বোর্ডের সদস্য হয়ে সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করা উচিৎ।
ইমরান আহমদ ব্যবসায়ীদের কাছে কর্মীদের নিরাপত্তা ও আইনি সহায়তার দাবি জানান। তিনি কর্মীদের স্বাস্থ্য ইন্স্যুরেন্স যেন নিয়মতান্ত্রিক হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে বলেন।
ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এমিরেটস ফ্যাসিলিটি ম্যানেজমেন্টের মোহাম্মদ খামিস ও মোহাম্মদ মানসুর বাংলাদেশি কর্মীদের কঠোর পরিশ্রমের প্রশংসা করেন এবং আগামীতে স্লিল ডেভেলাপের উপর জোর দেন।