আবারও দাম বাড়লো এলপিজি ও অটোগ্যাসের। বেসরকারি পর্যায়ে এলপিজির দাম প্রতিকেজি ৭৭ টাকা ৪০ পয়সা ধরে ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম মূসকসহ ৯৯৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা জুলাই মাসে ছিল ৮৯১ টাকা এবং জুন মাসে ছিল ৮৪২ টাকা। এদিকে প্রতি লিটার অটোগ্যাসের দাম প্রতি লিটার ৪৪ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪৮ টাকা ৭১ পয়সা নির্ধারণ করেছে হয়েছে। আগামী ১ আগস্ট থেকে এ দাম কার্যকর হবে।
বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) অনলাইনে এক সংবাদ সম্মেলনে ভোক্তা পর্যায়ে এলপিজির তৃতীয়বারের মতো দামের এই আদেশ দেয় বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। এসময় বিইআরসি’র চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল, কমিশনের সদস্য মোহাম্মদ আবু ফারুক, মকবুল-ই এলাহী, বজলুর রহমান, কামরুজ্জামান, সচিব রুবিনা ফেরদৌসীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এর বাইরে ৫.৫, ১২.৫, ১৫, ১৬, ১৮, ২০, ২৫, ৩০, ৩৩, ৩৫ ও ৪৫ কেজি এলপিজির দামও বিইআরসি আদেশে পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে।
তবে সরকারি পর্যায়ে সাড়ে ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম আগের মতোই ৫৯১ টাকা থাকবে। যেহেতু এই দামের সঙ্গে সৌদি সিপির কোনও সম্পর্ক নেই। যা কমিশনের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।
এদিকে আবাসিক এ শিল্পে কেন্দ্রীয়ভাবে এলপিজির ব্যবহার শুরু হয়েছে। নতুন পদ্ধতিতে একসঙ্গে বাসা বা কারখানার নিচে বা পাশে বড় সিলিন্ডার থেকে এলপি গ্যাস ব্যবহার করা হচ্ছে। এই সিলিন্ডার থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে বাসায় বাসায় বা কারখানায় সরবরাহ করা হচ্ছে গ্যাস। এটির দামও কমিশন পুনর্নির্ধারণ করে।
এই রেটিকুলেটেড সিস্টেমে সরবরাহ করা এলপিজির দাম ভোক্তা পর্যায়ে মূসক ছাড়া প্রতিকেজি ৬৭ টাকা ২৭ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৭৫ টাকা ১৯ পয়সা এবং মূসকসহ ৭১ টাকা ৯৪ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৮০ টাকা ৪৩ পয়সা অথবা লিটার হিসাবে প্রতি লিটার মূসক ছাড়া ০ দশমিক ১৪৯৪ টাকা থেকে বাড়িয়ে ০ দশমিক ১৬৭১ টাকা এবং মূসকসহ প্রতি লিটার ০ দশমিক ১৫৯৭ টাকা থেকে বাড়িয়ে ০ দশমিক ১৭৮৭ টাকা পুনর্নির্ধারণ করেছে কমিশন।
বিইআরসি’র চেয়ারম্যান জানান, বিইআরসি আইনের অনুচ্ছেদ ক অনুযায়ী জুলাই মাসের জন্য সৌদি আরামকো কর্তৃক প্রোপেন ও বিউটেনের ঘোষিত সৌদি সিপি যথাক্রমে প্রতি মেট্রিক টন ৬২০ ডলার এবং ৬২০ ডলার অনুযায়ী প্রোপেন ও বিউটেনের মিশ্রণ অনুপাত ৩৫:৬৫ বিবেচনায় প্রোপেন ও বিউটেনের গড় সৌদি সিপি প্রতি মেট্রিক টন ৬২০ ডলার বিবেচনা করে এই দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।
জুন মাসে এই প্রোপেন ও বিউটেনের ঘোষিত সৌদি সিপির দাম ছিল যথাক্রমে প্রতি মেট্রিক টন ৫৩০ ডলার এবং ৫২৫ ডলার। এ অনুযায়ী জুন মাসে প্রোপেন ও বিউটেনের মিশ্রণ অনুপাত ৩৫:৬৫ বিবেচনায় প্রোপেন ও বিউটেনের গড় সৌদি সিপি প্রতি মেট্রিক টন ৫২৬.৭৫ ডলার বিবেচনা করে দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, গত ১২ এপ্রিল প্রথমবারের মতো এলপিজির দাম নির্ধারণের ঘোষণা দেয় কমিশন। সাধারণত সৌদি সিপি (কন্ট্রাক্ট প্রাইস) অনুযায়ী দেশে এলপিজির দাম নির্ধারিত হয়। প্রতি মাসের শেষে যখন সৌদি সিপির দাম পরিবর্তন হয়, তখন কমিশন এলপিজির দাম পরিবর্তনের বিষয়ে নতুন করে আদেশ দেয় কমিশন।
বিইআরসি’র চেয়ারম্যান বলেন, দাম পূনঃনির্ধারণ করা হলেও গত ১২ এপ্রিল এলপিজির সংক্রান্ত অন্যান্য যেসব আদেশ কমিশন দিয়েছিল তা অপরিবর্তিত থাকবে।
দাম কার্যকরের বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের একটি মাত্র অফিস, জনবল কম। সবার সহযোগিতা ছাড়া এই দাম একা কমিশনের পক্ষে বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়।
এলপিজি এসোসিয়েশন লোয়াব এই দাম মানতে চায় না। তারা নতুন করে দাম নির্ধারণের আবেদন করেছিল। সে বিষয়ে চেয়ারম্যান বলেন, ২০-২২টি লাইসেন্সি আবেদন করেছে। তা আমরা গ্রহণ করেছি। গ্রহণ করলে শুনানি করতে হয়। আমরা ৭ জুলাই শুনানির তারিখ ঠিক করলেও করোনার পরিস্থিতি বিবেচনা করে শুনানি পেছানো হয়েছে। অনলাইনে করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আবেদনকারীদের অনেকেই তাতে রাজি হয়নি। এই কারণে গত ২৭ জুলাই মিটিং করেছিলাম। সভায় আগামী ৫ তারিখ লকডাউন শেষ হলে দ্রুত শুনানির তারিখ দিয়ে শুনানি করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।