মাধ্যমিক পর্যায়ের মেয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবিতে বিক্ষোভ হয়েছে আফগানিস্তানে। শনিবার (২৬ মার্চ) রাজধানী কাবুলের সমাবেশে যোগ দেন শিক্ষার্থী ও নারী অধিকার কর্মীরা।
‘তোমরা আমার বই পুড়িয়ে দিলে, আমি মাটিতে লিখবো/ শিক্ষার অধিকার ফেরত চাই’; প্রতিবাদী এসব স্লোগানে মুখর হয় কাবুলের রাজপথ। শহরের সিটি স্কয়ারে স্কুলের বই-প্ল্যাকার্ড হাতে জমায়েত হন বিক্ষোভকারীরা। তালেবান সরকারের প্রতি তাদের দাবি একটাই- ছেলেদের পাশাপাশি নিশ্চিত করা হোক মেয়ে শিক্ষার অধিকার।
বিক্ষোভে অংশ নেয়া একজন বলেন, আশা করি গোটা বিশ্ব আজ আমাদের কথা শুনবে। আফগানিস্তানে যা চলছে তা থামাতে একটা কাজই করার আছে। এসবের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো। আজ প্রতিবাদ না করলে আগামীতে দাসত্ব বরণ করতে হবে।
নারী অধিকার কর্মী লাইয়া ওয়াশিম বলেন, তালেবানদের উচিৎ স্কুল খুলে দেয়া। নারীরা সমাজের অর্ধেক। আমরাও পুরুষের কাধে কাধ মিলিয়ে কাজ করতে পারি। চাইলেই তারা নারীদের বাদ দিয়ে সমাজ গড়ার পরিকল্পনা করতে পারে না।
আফগানিস্তানে তালেবানের ক্ষমতা দখলের পর কয়েক মাস বন্ধ ছিলো স্কুলগুলো। তবে ছেলেদেরসহ মেয়েদের প্রাথমিক পর্যন্ত কার্যক্রমের অনুমতি দেয় ক্ষমতাসীনরা। আর মাধ্যমিকের মেয়েরা ক্লাসে ফিরে, গেল সপ্তাহে। কিন্তু, দীর্ঘস্থায়ী হয়নি তাদের স্বস্তির হাসি। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বন্ধ করে দেয়া হয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
তালেবান সরকারের এমন আচরণে ধোঁয়াশায় নারী শিক্ষার্থী আর মানবাধিকার কর্মীরা। শিক্ষার অধিকার নিয়ে ৯০ দশকের কট্টর তালেবান শাসন ফিরে আসার শঙ্কা তাদের।
নারী অধিকার কর্মী ফারহানা হামিদি বলেন, তালেবান দেশবাসী ও বিশ্ববাসীর সামনে নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি করেছিল। কিন্তু আজ তারা পুরোপুরি উল্টো কাজ করলো। এর মাধ্যমে আফগানিস্তানের ভবিষ্যৎ ও অর্থনীতিকে তারা আরও হুমকির মুখে ফেলছে। অধিকার আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো।
গেল বছর আগস্টে আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে তালেবান। সে সময় নারী শিক্ষা ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় উদারনীতির প্রতিশ্রুতি দিলেও ধীরে ধীরে আবারও কট্টরপন্থী নীতির পথেই হাটছে তারা।