গাজায় কোনো অস্ত্রবিরতি হবে না, হামাসকে নিশ্চিহ্ন করেই অভিযান থামবে বলে হুঁশিয়ারি দিলেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। গাজায় অস্ত্র বিরতির জন্য যখন বিভিন্ন দেশ তৎপর, এমন সময়ই রোববার (২৩ অক্টোবর) এই হুমকি দিলেন তিনি। খবর আল জাজিরার।
রোববার স্থল অভিযানের প্রস্তুতি এবং সেনা মহড়া পর্যবেক্ষণে যান নেতানিয়াহু। সেখানে তিনি বলেন, চলমান যুদ্ধে হিজবুল্লাহ্ সরাসরি জড়ালে সেটি লেবাননের জন্য ধ্বংস ডেকে আনবে। একইদিন ইরানও পাল্টা হুমকি দিয়ে জানিয়েছে, গাজা’য় আগ্রাসন বন্ধ না হলে মার্কিন-ইহুদি আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে পুরো মধ্যপ্রাচ্য।
মূলত, ১০ অক্টোবর থেকেই সীমান্ত এলাকায় ৩ লাখ ৬০ হাজার রির্জাভ সেনা মোতায়েন করে ইসরায়েল। আগে থেকেই মাঠে ছিল এক লাখ ৬৯ হাজার সৈন্য। বিপুল এ সেনা সমাবেশের লক্ষ্য একটাই, সর্বাত্মক অভিযানের মাধ্যমে হামাসের মূলোৎপাটন।
কয়েকদিন থেকে রণপ্রস্তুতি নিলেও স্থল অভিযান শুরু হয়নি। রোববার সেনাদের মনোবল বাড়াতে উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্ত পরিদর্শনে যান দেশটির প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। সেখানে তিনি বলেন, এটা যুদ্ধ নয়। বরং ইসরায়েলিদের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই। করো অথবা মরো পরিস্থিতি। হামাস যোদ্ধাদের যেকোনো মূল্যে মরতে হবে। আমরা দুটি লড়াইর মধ্যে রয়েছি। একটি, ভূখণ্ড দখলে রাখা। অপরটি, সশস্ত্র গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অভিযান। হামাসকে পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন করার মধ্যে দিয়েই শেষ হবে অপারেশন। এরপরই আসবে চূড়ান্ত বিজয়।
একইসাথে হিজবুল্লাহ’র প্রতিও স্পষ্ট হুমকি দেন নেতানিয়াহু। তিনি বলেন হিজবুল্লাহ্ পুরোপুরি যুদ্ধে প্রবেশ করবে কিনা এখনই বলা যাচ্ছে না। সশস্ত্র সংগঠনটি যদি এই সিদ্ধান্ত নেয়, সেটা দ্বিতীয় লেবানন যুদ্ধে গড়াবে। হামাসকে সমর্থন দেয়া হবে তাদের জীবনের বড় ভুল। এর মাধ্যমে লেবাননের ধ্বংস ডেকে আনতে যাচ্ছে হিজবুল্লাহ।
একইদিন, ইসরায়েল ও দেশটির পশ্চিমা মিত্রদের পাল্টা হুমকি দেয় ইরান। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদোল্লাহি বলেন, অঞ্চলটির অবস্থা বর্তমানে বারুদের ড্রামের মতো। শুধু দেয়াশলাই জ্বালানোর অপেক্ষা। ছোট্ট ভুলে, বাড়বে যুদ্ধের ভয়াবহতা, হতে পারে গণহত্যা ও জাতিগত নিধনের মতো ঘটনা। যুক্তরাষ্ট্র আর পা-চাটা পশ্চিমা মিত্রদের বলবো, তারা যদি অবিলম্বে মানবতা বিরোধী অপরাধ বন্ধ না করে, তাহলে তাদের চড়া মাশুল গুণতে হবে।
ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের তথ্য অনুসারে, হামাসের সামরিক শাখা কাসেম ব্রিগেডের সদস্য ১৫ থেকে ২০ হাজার। সাথে রয়েছে ইসলামিক জিহাদের ৬ হাজার যোদ্ধা। ইসরায়েলের দাবি, বিমান হামলায় গেরিলাদের দুর্বল করার পর, শুরু হবে স্থল অভিযান।