অর্থ পাচার আর দুর্নীতির ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মূলনীতি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক চরিত্র হারিয়েছে আওয়ামী লীগ, বিএনপি সম্পর্কে মিথ্যাচার করাই এখন দলটির রাজনীতি। জনগণ বিশ্বাস করে, বর্তমানে আওয়ামী লীগের মূলনীতি- টাকা পাচার আর দুর্নীতি।
বুধবার, মে ১৮,২০২২, দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাহেব নিজেকে মিথ্যার মহারাজা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। ঘুরে-ফিরে বিষয় একটাই- বিএনপির বিরুদ্ধে আজগুবি, অসংলগ্ন, কল্পিত সব মিথ্যাচার ও কুৎসা উদগীরণ করা।’
তিনি আরো বলেন, ‘ওবায়দুল কাদেরদের টিকে থাকার একমাত্র উপায় হলো নতুন নতুন মিথ্যা উৎপাদন করা। আর এই মিথ্যার রাজনীতিতে বিপন্ন হয়ে পড়েছে রাষ্ট্র ও সমাজ। খেসারত দিতে হচ্ছে গোটা জাতিকে।’
আওয়ামী নেতাদের টাকা পাচারের কাহিনী সিন্দাবাদের কাহিনীকেও হার মানায় মন্তব্য করে রিজভী বলেন, ‘জনগণের অর্থকে কিভাবে আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী লোপাট করেছে তার নতুন নতুন লোমহর্ষক তথ্য বেরিয়ে আসছে। এসব অজানা লুটপাটের কাহিনী বেরিয়ে আসতে শুরু করায় আওয়ামী সরকার এখন দিশেহারা। সেজন্যই আকস্মিকভাবে জিয়া পরিবার ও বিএনপির বিরুদ্ধে বানোয়াট কাহিনী প্রচার করে নিজেদের চেহারাকে আড়াল করতে ব্যর্থ চেষ্টা করছেন তারা। এই লুটেরা সরকার আরাম-আয়েশে টু-পাইস কামাতে গিয়ে সবচাইতে বড় বাধা মনে করছে দেশনায়ক তারেক রহমানকে। তাই তার বিরুদ্ধে হিংসাশ্রয়ী অপপ্রচার চালাচ্ছে।’
রিজভী বলেন, ‘পদ্মা সেতুর পর্বত-সমান টোল হার নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এখন জনগণের পকেট কেটে জোর করে টাকা নিয়ে সেতু বানিয়ে সেই সেতু পারাপারের জন্য আবার দীর্ঘকাল জনগণের পকেট কাটা চলতে থাকবে। কেবল পদ্মা সেতু নয়, ফ্লাইওভার, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, টানেল, বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ প্রতিটি মেগা প্রজেক্টে হরিলুট হচ্ছে। আর দেশ ধাবিত হচ্ছে শ্রীলঙ্কার মতো দেউলিয়া পরিস্থিতির দিকে।’
তিনি বলেন, ‘সরকার স্বল্প আয়ের সাধারণ মানুষের উপর বোঝা চাপিয়ে দিচ্ছে নির্দয়ভাবে। সেদিন আর বেশি দূরে নয় যেদিন জনগণ প্রতিটি পয়সার কড়ায়-গন্ডায় হিসাব নেবে। জনগণ জানতে চায়, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ ফান্ড থেকে ডিজিটাল দুর্নীতির মাধ্যমে লোপাট করা ৮১০ কোটি টাকা এখনো কেন ফেরত আনা যায়নি? এ টাকা লোপাট করার খবরটি কেন ২৮ দিন পর্যন্ত দেশের জনগণকে জানতে দেয়া হয়নি? কেন টাকা লোপাটের তথ্য জনগণের কাছ থেকে গোপন করতে চেয়েছিল? জনগণ জানতে চায়, কোভিডকালে ভ্যাকসিন কেলেঙ্কারির ২৩ হাজার কোটি টাকা কোথায় গেছে?’
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফৎ আলী সপু, নির্বাহী কমিটির সদস্য তারিকুল ইসলাম তেনজিং, আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।