বেনাপোল প্রতিনিধি: অর্থের অভাবে বন্ধের পথে শার্শার শ্যামলাগাছি হযরত শাহজালাল ফ্রি মডেল মাদরাসা,
‘ফ্রি খাবার বাড়ি ও এতিমখানা। দ্রব্যমূল্যের বাজারে সেবামূলক প্রতিষ্ঠান চালাতে বর্তমানে হিমশিম খাচ্ছেন প্রতিষ্ঠানের পরিচালক বিশিষ্ট সমাজ সেবক ও উদ্ভাবক মিজানুর রহমান। এ অবস্থায় এতিম শিশুদের মুখে তিন বেলা খাবার তুলে দিতে সমাজের সকল শ্রেণি পেশার মানুষের কাছে সহযোগিতা কামনা করেন উদ্ভাবক মিজান।
সরেজমিনে তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়,
যশোরের শার্শা উপজেলার শ্যামলাগাছি গ্রামে অবস্থিত হযরত শাহজালাল (রাহ:) ফ্রি মডেল মাদরাসা ও এতিমখানা। যে মাদরাসায় ছাত্রদের পড়াতে কোনো অর্থ নেওয়া হয় না। গত তিন বছর ধরে এ মাদরাসা পরিচালনা করে আসছেন শার্শার কৃতি সন্তান উদ্ভাবক মিজানুর রহমান।
মিজানুর রহমান শুধু এই ফ্রি মডেল মাদরাসা চালু করেননি, তিনি তার মাদরাসা প্রাঙ্গণে অসহায়, পথচারী ও ভিক্ষুকদের জন্য ‘ফ্রি খাবার বাড়ি’ চালু করেছেন অনেক আগেই। তবে এ সেবামূলক প্রতিষ্ঠান চালাতে বর্তমানে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাকে। দ্রব্য মূল্যের বাজারে চরম অর্থ সংকটে বন্ধ হওয়ার শঙ্কায় ভুগছেন দেশের বহুল আলোচিত এই সেবামূলক প্রতিষ্ঠান।
মিজানুর রহমান জানান, তিনি গত চার বছর আগে ‘ক্ষুধা লাগলে খেয়ে যান’ এমন স্লোগানে অসহায়, পথচারী, ভিক্ষুকদের জন্য ‘ফ্রি খাবার বাড়ি’ প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর থেকে ছিন্নমূল মানুষের মাঝে খাদ্যসহ বিভিন্ন ওষুধ ও প্রয়োজনীয় উপাদান সামগ্রী সহায়তা করা শুরু করেন তিনি। দেশ ও প্রবাস থেকে আর্থিক অনুদান দিয়েও টেনেটুনে চলছিল তার বহুমুখী সামজ সেবামূলক প্রতিষ্ঠানটি।
তবে সম্প্রতি সময়ে তার মাদরাসার ছাত্রের সংখ্যা এবং ফ্রি খাবার বাড়িতে খেতে আসা মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় খরচ সামলে উঠতে পারছেন না। চরম অর্থ সংকটে পড়ায় এতিম বাচ্চারা বর্তমানে শুধু ডাল আর নিরামিষ সবজি দিয়ে তিনবেলা ভাত খাচ্ছে। বহুদিন ধরে মাছ মাংস খেতে না পেয়ে এতিম শিশুরা অনেক কষ্টে দিন পার করছে।
মাদরাসার এতিম শিশুরা কষ্ট জড়িত কন্ঠে জানায়, আগে আমরা প্রতি সপ্তাহের প্রতিদিন মাছ সহ অন্তত তিনদিন মাংস খেতাম। কিন্তু মাদরাসায় এখন পর্যাপ্ত অর্থ সহায়তা না আসায় আমরা প্রায় তিনমাস কোন মাছ মাংস খেতে পাইনি। শুধু ডাল ভাত আর সবজি দিয়ে খেতে হচ্ছে।
উদ্ভাবক মিজানুর রহমান বলেন, আমার মাদরাসায় বর্তমানে ৬০ জন ছাত্র রয়েছে, তিন বছরেরও এতিম বাচ্চা রয়েছে। অপরদিকে অসহায় ক্ষুধার্থদের জন্য প্রতিষ্ঠা করা ‘ফ্রি খাবার বাড়িতে’ প্রতিদিন প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ জন পথচারী, ভিক্ষুক, মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষেরা তিনবেলা খেয়ে থাকে। সব মিলিয়ে মাসে আমার এ সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে ব্যয় হয় প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। বর্তমানে অর্থ সহায়তা একেবারই আসছেনা বললেই চলে। এখন কিভাবে এই সব এতিম শিশু ও ছিন্নমূল মানুষের মুখে আহার তুলে দিবো সেটা ভেবে গভীর চিন্তায় আছি।
বর্তমানে আর্থিক অনুদান সহ সার্বিক সহোযোগিতার অভাবে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ হতে বসেছে। এ প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ হলে অনেক এতিম বাচ্চাকে আবারও পথের ঠিকানায় ফিরে যেতে হবে, আহার বন্ধ হয়ে যাবে শত শত ভিক্ষুক এবং অসহায়দের। এমতাবস্থায় সমাজের সকল শ্রেণি পেশার মানুষের কাছে সহোযোগিতা কামনা করেন উদ্ভাবক মিজানুর রহমান।