আনুষ্ঠানিকভাবে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করলেন শান্তিতে নোবেলজয়ী মালালা ইউসুফজাই। বিখ্যাত অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শন রাজনীতি ও অর্থনীতিতে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করলেন তিনি। আরও দেড় বছর আগেই এই ডিগ্রি অর্জন করলেও করোনা মহামারির কারণে তার সনদ প্রদান অনুষ্ঠান পেছানো হয়েছিল।
টুইটারে স্বামী আসার মালিকের সঙ্গে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ছবি পোস্ট করে তার ডিগ্রি অর্জনের কথা জানান। এসময় তাদের দুজনকেই উৎফুল্ল দেখা যায়।
একটি ছবিতে দেখা যায়, সমাবর্তনের কালো গাউন ও টুপি পরেছেন মালালা। অন্য আরেকটিতে তাকে বন্ধুদের সঙ্গে দেখা যায়। এদিন মালালার বাবা জিয়াউদ্দীন ইউসুফজাই ও মা তূর পেকাই ইউসুফজাইও উপস্থিত ছিলেন।
মেয়েদের স্কুলে যাওয়ার সুযোগ করে দিতে আহ্বান জানিয়ে বিবিসির অ্যান্ড্রু মার শোতে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পাকিস্তানের এই নারী অধিকারকর্মী বলেন, আমার আশঙ্কা—আজকে যে নিষেধাজ্ঞাকে তারা অস্থায়ী বলছেন—তা সম্ভবত অস্থায়ী না। ১৯৯৬ সালেও এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল, যা পাঁচ বছর স্থায়ী হয়েছিল।
গেল আগস্টে আফগানিস্তানের ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর মেয়েদের শিক্ষার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে তালেবান। ছেলেদের স্কুল খুলে দেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত মাধ্যমিক স্কুল মেয়েদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়নি।
তবে ইসলামিক আইন অনুসারে আলাদা শিক্ষার ব্যবস্থা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পর মেয়েদের জন্য স্কুল খুলে দেওয়ার কথা জানিয়েছে তালেবান।
মালালা বলেন, মেয়েদের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অতিসত্বর পরিপূর্ণভাবে খুলে দিতে আমি তালেবানের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
আফগানিস্তানে নারীদের অধিকার নিশ্চিতে পদক্ষেপ নিতে জি২০ ও বিশ্ব নেতাদের কাছে অনুরোধ জানান তিনি। বলেন, স্কুলে যাওয়ার যোগ্য মেয়েদের শিক্ষার ব্যবস্থা করে দিতে হবে। আমরা কোনো বিশেষ কিংবা অতিরিক্ত সুবিধা দাবি করছি না, এটি মৌলিক মানবাধিকার।
সম্প্রতি এই টুইটপোস্টে পাকিস্তানি ক্রিকেট বোর্ড কর্মকর্তা আসের মালিকের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার কথা জানিয়েছেন ২৪ বছর বয়সী মালালা।
তালেবানের গুলিতে মৃত্যুমুখ থেকে ফিরে আসা এই নারীশিক্ষা কর্মী সদ্য বিয়ে করে জীবনের নতুন অধ্যায় শুরুর পরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার মুখে পড়েছেন। এক সময়কার একটি সাক্ষাৎকারে বিয়ে নিয়ে মালালার মন্তব্য ঘিরে চলছে সমালোচনা।
ব্রিটিশ ভোগ সাময়িকীকে দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে মালালা বলেছিলেন, আমি এখনও বুঝি না মানুষ কেন বিয়ে করে। আপনি একটা মানুষের সঙ্গে থাকতে চাইলে এর জন্য কাগজপত্র সই করার দরকার কী? কেন দুজন মানুষ অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে জীবন ভাগ করে নিতে পারে না?
গত জুলাইয়ে ওই মন্তব্য করেছিলেন মালালা। এরপর গত সপ্তাহেই তিনি আসার মালিকের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছেন। লন্ডনে তাদের বিয়ে হয়। মঙ্গলবার মালালা এক টুইটে সে খবর দেওয়ার পরই বিয়ে নিয়ে আগেকার ওই মন্তব্যের জন্য সমালোচিত হচ্ছেন তিনি।