শাহ সুমন, বানিয়াচং, থেকেঃ বিশ্বের বৃহত্তম গ্রাম বানিয়াচং। গ্রামটিকে ঘিরে রয়েছে অনেক প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন ও ঐতিহাসিক স্হাপনা। নৈসর্গিক রূপ আর ইতিহাস ঐতিহ্যের লিলাভূমি বানিয়াচং উপজেলা। আমন ধানের মৌ মৌ গন্ধ আর নবান্নের কলতানে ভাস্কর বাংলার চিরায়ত রূপ। বোরো মৌসুমে চারদিকে সবুজের সমারোহ।
বৈশাখে সোনালী রঙের রঙিন ধানসিঁড়ি মাঠ দেখলে প্রান জুড়িয়ে যায় । প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর বানিয়াচং উপজেলার ঐতিহাসিক স্হাপনা বিথঙ্গলের আখড়া সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। বৈষ্ণব ধর্মাবলম্বীদের জন্য অন্যতম তীর্থস্হান বানিয়াচং উপজেলার ঐতিহাসিক বিথঙ্গলের আখড়া। বানিয়াচং উপজেলা সদর হতে ১২ কিলোমিটার দক্ষিণ -পশ্চিমে হাওর পাড়ে বিথঙ্গল গ্রামে এই আখড়াটি অবস্থিত।
বিথঙ্গল গ্রামে আখড়াটির অবস্থান বলে দর্শনার্থীদের কাছে বৈষ্ণব ধর্মাবলম্বীদের এই স্হানটি বিথঙ্গল আখড়া নামে বেশ পরিচিত। দর্শনার্থীরা শুকনো মৌসুমে হবিগঞ্জের কামড়াপুর থেকে জীপযোগে হয়ে বানিয়াচং উপজেলার অন্তর্ভুক্ত সুজাতপুর ইউনিয়ন থেকে নৌকাযোগে বিথঙ্গল আখড়া পরিদর্শন করতে পারেন। অপরদিকে বর্ষাকালে হবিগঞ্জ কালার ডোবা অথবা বানিয়াচং আদর্শ বাজার থেকে নৌকাযোগে বিথঙ্গল আখড়া পরিদর্শন করতে পারেন।
বিথঙ্গল আখড়াটিতে ঘিরে কার্তিক মাসের শেষদিন ভোলা সংক্রান্তি উপলক্ষে কীর্তন হয়।ফাল্গুন মাসের পূর্নিমা তিথিতে দোল পূর্নিমার ৫ দিন পর ৫ম দোল উৎসবের আয়োজন করা হয়। চৈত্র মাসে ঘাটে বারুণী মেলা বসে।এছাড়া আষাঢ় মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। ঐতিহাসিক এই বিথঙ্গল আখড়ায় প্রতিটি উৎসবে ৫ থেকে ১০ হাজার ভক্তের সমাগম ঘটে। বিথঙ্গল আখড়ায় দর্শনীয় বস্তুর মধ্যে উল্লেখযোগ্য রয়েছে ২৫ মন ওজনের শ্বেত পাথরের চৌকি বা খাট,পিতলের তৈরি সিংহাসন, প্রাচীন কারুকার্য সমৃদ্ধ রথ এবং রৌপ্য পাখি ও সোনার মুকুট। জনপ্রিয় এই বিথঙ্গলের আখড়া দেখতে প্রতিনিয়ত দেশের বিভিন্ন স্হান থেকে দর্শনার্থীরা আসেন।বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে হবিগঞ্জের দর্শনার্থীরা নৌকাযুগে বিথঙ্গলের আখড়া পরিদর্শন করে আনন্দ উপভোগ করেন।