দীর্ঘ দিনের মিত্র সৌদি আরবের সঙ্গে মতবিরোধ তৈরি হওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। এ ধরনের খবরকে সম্পূর্ণ মিথ্যা আখ্যা দিয়ে তিনি দাবি করেছেন দুই দেশের সম্পর্ক খুবই ভালো রয়েছে এবং নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। দেশটির সম্প্রচারমাধ্যম দুনিয়া নিউজ চ্যানেলকে মঙ্গলবার রাতে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই মন্তব্য করেন তিনি। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, পাকিস্তানের সেনাপ্রধান রিয়াদ সফর থেকে ফেরার পর দুই দেশের সম্পর্ক নিয়ে কথা বলেছেন ইমরান খান।
কাশ্মির ইস্যুতে আন্তর্জাতিক ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) বিশেষ বৈঠক আহ্বান করতে রিয়াদের ওপর চাপ প্রয়োগের পর পাকিস্তানে একটি ঋণ এবং তেল সরবরাহ বন্ধ করে দেয় সৌদি আরব। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে সৌদি যুবরাজের পাকিস্তান সফরের সময়ে ৬২০ কোটি ডলারের ঋণ ও তেল সরবরাহের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। তবে ওআইসি’র পররাষ্ট্র মন্ত্রীদের বিশেষ বৈঠক ডাকতে ইসলামাবাদ রিয়াদের ওপর চাপ প্রয়োগ করলে ওই চুক্তি বাতিলের কথা জানায় সৌদি আরব। এই ঘটনাকে দুই পুরনো মিত্রের সম্পর্কের অবনতির নতুন ইঙ্গিত হিসেবে দেখেন অনেকেই।
ওই বিরোধের মধ্যে গত সোমবার এক দিনের সফরে রিয়াদে যান পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে এই সফরকে সামরিক বিষয় সংক্রান্ত বলে দাবি করা হয়। তবে সেনাবাহিনী ও সরকারের ঊর্ধ্বতন কয়েকজন কর্মকর্তা পরিচয় গোপন রেখে জানিয়েছেন এই সফরের উদ্দেশ্য ছিল পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রক্ষায় সৌদি আরবের সঙ্গে মতবিরোধ নিরসন করা।
সেনাপ্রধানের রিয়াদ সফরের পরদিন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেন, ‘সৌদি আরবের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের অবনতি হওয়ার যে গুজব শোনা যাচ্ছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমাদের সম্পর্ক খুবই ভালো। আমরা সবসময়ই যোগাযোগ রাখছি।’ ইমরান খান বলেন, ‘আমরা মনে করি কাশ্মির ইস্যুতে ওআইসি’র আরও ভূমিকা রাখা উচিত। সৌদি আরবের নিজস্ব বৈদেশিক নীতি রয়েছে। ফলে আমরা বললেই সৌদি আরব কিছু একটা করে ফেলবে সেটা ঠিক নয়।’
বিশ্লেষকরা মনে করেন কাশ্মির ইস্যুতে পাকিস্তানকে সমর্থন দিয়ে ভারতের সঙ্গে নিজেদের ব্যবসায়িক স্বার্থকে ক্ষতিগ্রস্থ করতে চাইছে না সৌদি আরব।