
মনির সরকার, সিরাজদিখান থেকেঃ মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ২ লাখ টাকা জরিমানা ও ফসলী জমির মাটি না কাটার অঙ্গিকার দেওয়ার তিন দিনের মাথায় প্রশাসনকে ফাঁকি দিয়ে আবার মাটি কাটা শুরু করেছে মাটি দস্যূরা । ঘটনাটি ঘটছে মুন্সিগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান উপজেলার বাসাইল ইউনিয়নের গুয়াখোলা মৌজায়। জানা যায় যে, সিরাজদিখান উপজেলার গুয়াখোলা মৌজায় বাসাইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলামের ছেলে ও ভাতিজা সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন যাবত ফসলী জমির মাটি কেটে ইটভাটায় নিচ্ছে। এমন
খবর পেয়ে সিরাজদিখান উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাসনিম আক্তার গত ১৫ ফেব্রুয়ারি মাটি কাটার সময় চারজনকে হাতেনাতে গ্রেফতার করে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে দুই লাখ টাকা জরিমানা করে। ভবিষ্যতে আর এ ধরনের কাজ করবে না বলে অঙ্গীকারও করে।
অথচ তিন দিনের মাথায় আবার শুরু করেছে ফসলি জমির মাটি কাটা। এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে।
তবে ভমি দস্যুরা এখন দ্রুত মাটি কাটা শেষ করার জন্য দিনের আলোর পাশাপাশি রাতেও কাটছে ফসলি জমির মাটি। ভমি দস্যুদের নতুন এ কৌশলে মাটি কাটার ফলে ভেকু মেশিন ও মাটি কাটার ট্রলির বিকট শব্দে এলাকাবাসীর ঘম হারাম হচ্ছে। আইন না মেনে ফসলি জমির মাটি কাটা যেমন অপরাধ, অন্য দিকে কমে যাচ্ছে ফসলি জমি, পরিবেশ হচ্ছে দূষিত, বেকার হচ্ছে কৃষক, সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব, রাতের স্বল্প আলোয় বাড়ছে দর্ঘটনা।
এলাকাবাসী জানান, রাতের আধারে তাদের বাধা দিতে গেলে ভূমি দস্যুরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাদের মারতে আসে ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। ঘটনাটি বর্তমানে এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। এলাকাবাসী জানান গুয়াখোলা মৌজায় ফসলি জমির মাটি কাটা শুরু হয়েছে প্রায় ৭/৮ বছর আগে থেকে। কিন্তু এলাকার চিহ্নিত ভূমি দস্যু সাইফুল ইসলাম ও তার ছেলেদের ভয়ে এলাকার কেউ মুখ খুলতে বা বাঁধা দিতে সাহস পায় না।
বর্তমানে তাদের নামে সিরাজদিখান থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। প্রতি বছর এভাবে মাটি কাটার ফলে গুয়াখোলা মৌজায় ফসলি জমি কমে বিশাল জলাশয়ে পরিণত হয়েছে।
বর্তমানে ভূমি দস্যুরা মাটি কাটার জন্য প্রবাহিত খাল মাটি দিয়ে বন্ধ করে রাস্তা বানিয়ে মাটি টানছে। ফলে প্রবাহিত খাল বন্ধ হয়ে গেছে। অন্যদিকে জমির মাটি কেটে অন্যর জমির ফসলের উপর দিয়ে নিয়ে গিয়ে ফসল নষ্ট করছে। বাধা দিলে জীবনের হুমকিসহ নানা ভাবে অপমান অপদস্ত হচ্ছে ফসলের মালিক। মাটি টানায় ভাড়ী যানবাহন ব্যবহার করায় সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত রাস্তা নষ্ট করছে। সরকারি আইন অনযায়ী কৃষি জমির মাটি ইট ভাটায় ইট প্রস্তুত করিবার জন্য ব্যবহার করে তাহা হইলে দুই বছরের কারাদন্ড ও দুই লাখ টাকা জরিমানা।
অন্যদিকে গ্রামীণ সড়ক ব্যবহার করে ইটের কাচামাল ভারী যানবাহন দ্বারা পরিবহন করলে এক লাখ টাকা জরিমানা। এতসব আইন থাকার পরও বছরের পর বছর এভাবে গুয়াখোলা
ও আশেপাশের মৌজার জমির মাটি কেটে ইট ভাটায় যাচ্ছে। বিষয়টি এলাকাবাসীকে ভাবিয়ে তুলছে।