
আবু তালহা, সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলায় চলতি রবি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় রেকর্ড পরিমাণ সরিষার উৎপাদন হয়েছে। স্বল্প খরচ ও লাভজনক হওয়ায় সরিষা চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের। এবার রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণও ছিল কম, যার কারণে বিগত বছরগুলোর থেকে দ্বিগুণ ফসল উৎপাদন হয়েছে। কম সময়ের মধ্যে বাড়তি আয় হিসাবে সরিষা চাষাবাদ করে ভালো ফলন ও বাজার দর ভালো পাওয়ায় হাসি ফুটেছে কৃষকদের মুখে। বাড়তি আয়ের টাকা দিয়ে সেই জমিতেই বোরো ধান রোপন করছে কৃষকেরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সুত্র জানায়, এবছর সরিষা চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১ হাজার ৫’শত ৬০ হেক্টর। চাষাবাদ হয়েছে ২ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে। উৎপাদন হয়েছে ৩ হাজার ৪৮ মেট্রিক টন, পার হেক্টর ১.২৭ মেট্রিক টন। গতবছর চাষ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১ হাজার ৭ শত হেক্টর জমিতে। চাষাবাদ হয়েছিল হয়েছিল মাত্র ১ হাজার ৫ শত হেক্টর জমিতে, এতে উৎপাদন হয়েছিল ১ হাজার ৮ শত ৮০ মেট্রিক টন, পার হেক্টর ১.২৫ মেট্রিক টন।
এবছর উপজেলার রায়দৌলতপুর ইউনিয়নের তিনটি এলাকাতে ৩৮০ টি মৌবাক্স বসানো হয়েছিল। অন্যান্য স্থান থেকে এই এলাকাগুলোতে সব থেকে বেশি পরিমাণ ৩ হাজার ৬ শত ৯০ কেজি সরিষা উৎপাদন হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
উপজেলার রায়দৌলুদপুর ইউনিয়নের কৃষক আবু সামা বলেন, আমন ধান কাটার পর ও বোরো ধান লাগানোর মাঝামাঝি সময়ে জমি পতিত না রেখে বাড়তি আয়ের জন্য রবিশস্য হিসাবে আমরা সরিষা চাষাবাদ করি। এবার অন্যান্য বছরের তুলনায় ভালো ফলন পেয়েছি। তবে শেষ মুহূর্তে অসময়ে বৃষ্টির কারণে কিছুটা অসুবিধার মধ্যে পড়তে হয়েছে, তাতে তেমন কোন ক্ষতি হয়নি। সরিষা লাগানোর পর কাটা মাড়াই শেষে সব খরচ বাদ দিয়ে প্রতি বিঘায় কমপক্ষে ৩-৪ হাজার টাকা লাভ হয় বলে জানান।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আনোয়ার সাদাত জানান, আমন চাষাবাদের পর জমি ফাঁকা না রেখ সরিষা চাষ করে কৃষকরা পাচ্ছেন বাড়তি আয়ের সুযোগ। সরিষা চাষাবাদের কারণে জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পায় এতে বোরো চাষাবাদে সুবিধা হচ্ছে। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া ভালো থাকায় সরিষার ভালো ফলন হয়েছে। সরিষা চাষ লাভজনক হওয়ায় কৃষকদের আগ্রহ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়াও সরিষা চাষে উদ্ভুদ্ধ করতে কৃষকদের সরকারিভাবে বিনামূল্যে সার ও বীজ বিতরণ সহ ভালো ফলনের জন্য কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে সবধরনের পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। আগামীতে সরিষার চাষাবাদ আরো বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি আশা করছেন।