আবদুল্লাহ আল মামুন, সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধিঃ সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার দেয়াড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে তিনটি পদে ৩জন কর্মচারী নিয়োগে ৫০ লক্ষ টাকা অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার ওই স্কুলেই পাতানো নিয়োগ বোর্ড বসিয়ে প্রধান শিক্ষককে জিম্মি করে নামমাত্র পরীক্ষা নিয়ে এ নিয়োগ প্রক্রিয়ার কাজ সম্পন্ন করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি দেয়াড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নিরাপত্তা কর্মী, পরিচ্ছন্নতা র্কর্মী ও আয়া পদে নিয়োগ দেওয়ার জন্য স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় ২বার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। আবেদনের শেষ তারিখে ৩টি পদে মোট ২৫জন আবেদন করেন। স্কুল পরিচালনা পরিষদের সভাপতি গাজী মতিয়ার রহমান ও সদ্য যোগদানকারী মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য সুবিধামত নিয়োগ দিতে পরিকল্পনা স্বরুপ কাজ শুরু করেন। সে মোতাবেক নিয়োগ পরীক্ষার আগের দিন প্রবেশপত্র প্রদান করেন। পরীক্ষা ১০ ডিসেম্বর সকাল ১১টার কথা থাকলেও অদৃশ্য কারণে পরীক্ষা নেওয়া হয় বিকালে। এরই অংশ হিসেবে সভাপতির ছেলে সুমন একাধিক ব্যক্তির নিকট হতে নিয়োগের নামে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। এছাড়া সভাপতি নিরাপত্তা কর্মী পদে চাকরি দেওয়ার কথা বলে দেয়াড়া গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে খলিলুর রহমানের নিকট থেকে নিয়োগ বোর্ডের পূর্বেই স্কুলের সীমানায় তার জমি মেপে সীমানা নির্ধারণ করে নিলেও শেষ পর্যন্ত ১৮ লক্ষ টাকায় অন্য জনকে নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া আয়া পদে দেয়াড়া গ্রামের মাহফুজ সানার মেয়ে ঝর্ণা খাতুনের নিকট থেকে ১০ লক্ষ টাকা ও নেদা খাঁর মেয়ে সেলিনা খাতুনের নিকট থেকেও ৫লক্ষ টাকা নিয়ে অন্য জনের নিকট থেকে ১৬ লক্ষ টাকা নিয়ে নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া পরিচ্ছন্নতা কর্মী পদে ১৬ লক্ষ টাকা নিয়ে নিয়োগ প্রদান করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলার এক স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলেন, নতুন মাধ্যমিক স্যার মীর মোস্তাফিজুর রহমান যোগদানের পরেই সকল পদের জন্য রেট বেড়ে গেছে। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, নতুন স্যার প্রতিজন নিয়োগে ২ লক্ষ টাকা অগ্রিম ছাড়া বোর্ডে যাবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। সেই মোতাবেক মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার উক্ত তিন পদে নিয়োগ দিয়ে ৬ লাখ টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে স্কুলের সভাপতি গাজি মতিয়ার রহমান বলেন, আপনারা কিছু লিখবেন না। টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দেওয়া হয়নি।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল বারি জানান, আমি সভাপতি সাহেবের নির্দেশ মোতাবেক নিয়োগ বোর্ড করার আয়োজন করে দিয়েছি। এছাড়া আর কোন কিছু আমি জানি না।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মীর মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, নিয়ম অনুযায়ী নিয়োগ বোর্ড অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন হয়েছে। অর্থের বিনিময়ে নিয়োগ হয়েছে, এটা আমার জানা নেই। এমনকি এ নিয়োগ বোর্ডে আমি নিজে কোন অর্থ গ্রহণ করেনি। নিয়োগ বোর্ডে আমি একজন সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে কেবল দায়িত্ব পালন করেছি।