আবদুল্লাহ আল মামুন, সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার শ্রীউলা ও প্রতাপনগর ইউনিয়নে “কলিমাখালি হিজলিয়া পূর্বপাড়া সমবায় সমিতি” নামের একটি এনজিও অফিস খুলে সদস্যদের থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে অফিস বন্ধ করে দিয়েছে। গ্রহাকরা এনজিও অফিসে গিয়ে অফিসে তালাবদ্ধ দেখে হতাশ হয়ে ফিরছে।
উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নে হিজলিয়া বাস ষ্ট্যান্ডে অফিস নিয়ে এনজিও গ্রাহক সংগ্রহ শুরু করে। হিজলিয়া, কলিমাখালী, নাছিমাবাদসহ ইউনিয়নের তাদের কর্মীরা গিয়ে সদস্য ভর্তি করাতে থাকে। প্রত্যেক সদস্যকে ৫ হাজার টাকা করে সঞ্চয় জমা করলে ৫০.০০০ টাকা করে ঋণ দেওয়া হবে বলে প্রলোভন দেখান হয়। বড় অংকের টাকা ঋণ পাওয়ার প্রলোভনে পড়ে এলাকার সহজ সরল মানুষ টাকা সঞ্চয় করতে শুরু করেন। তাদেরকে গত রবিবার ঋণের টাকা দেওয়ার কথা ছিল। হিজলিয়া গ্রামের মধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্যরা ২০০০ থেকে ১০ হাজার টাকা সঞ্চয় করে রবিবার ঋণ নিতে হিজলিয়া অফিসে হাজির হয়। কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখে অফিসে তালা ঝুলছে। ফোন নাম্বারে ফোন করে দেখে ফোন বন্ধ। একে একে সদস্যদের ভিড়ে স্থানীয়রা সেখানে উপস্থিত হলে জানতে পারেন যে, রাতের আঁধারে এনজিও কর্তৃপক্ষ উধাও হয়ে গেছে।
সদস্য গাজিপুর গ্রামের হাবিবুল্যাহ’র পুত্র হাসান, হিজলিয়া গ্রামের করিম সরদার, আলমগীর, মুনজুরুল গাজী, সাহানুর গাজী, মহাসিন গাজী, আজিজ গাজিসহ বিভিন্ন গ্রামের সাধারণ মানুষের সঞ্চয় জমা করেছেন। এমন শত শত মানুষ তাদের ফাঁদে পা দিয়ে সঞ্চয় জমা করেছেন। এখন তারা টাকা খুইয়ে হায় হায় করছেন। প্রতারিত গ্রাহকরা প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ ব্যাপারে সমিতির সভাপতি আঃ করিমের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি সভাপতি পদ থেকে পদত্যাগ করেছি। এখন আমি আর নাই। আমার সদস্য পদ ফারুখ নামে একজনকে দিয়ে দিয়েছি।
সমিতির সহ-সভাপতি আঃ মজিদ বলেন, আমাদের সমিতির রেজিষ্ট্রেশন আছে সমবায় অফিসের। কিন্তু পরক্ষণে বলে না আমাদের সমিতির রেজিষ্ট্রেশন বিআরডিবি থেকে নেওয়া। পাশ বইতে তারা রেজিঃ নং- ০১ (আশাশুনি) ছাপিয়েছে। কোন সাল তারিখ নেই। কিন্তু সমবায় অফিসে যোগাযোগ করলে তারা বলেন তাদের থেকে ঐ নামে কোন সমিতি রেজিষ্ট্রেশন করা হয়নি। বিআরডিবি কোন সমিতির রেজিষ্ট্রেশনই করে না।
স্থানীয় ইউপি সদস্য কামরুল ইসলাম জানান, ঐ নামে কোন এনজিও আছে কি না তা আমার জানা নাই। ইউপি সদস্য আঃ রব বলেন এভাবে ভুয়া রেজিষ্ট্রেশন নাম্বার নিয়ে এনজিও চালায় এটা খুব দুঃখ জনক কথা। এলাকার শত শত সদস্যের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে এনজিও’র উধাও হওয়ার ঘটনায় প্রতারিত সদস্যরা চোখের পানিতে বুক ভাসাচ্ছে। তারা প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।