বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক বাড়ানোর তাগিদ দেয়া হয়েছে সম্প্রতি ঢাকায় অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে। করোনা ঠেকাতে বিদ্যমান সতর্কতার মধ্যেই (১লা জুলাই) সেগুনবাগিচায় বৈঠকটি হয়। মূলত পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের সঙ্গে ঢাকায় নব নিযুক্ত পাকিস্তানের হাই কমিশনার ইমরান আহমেদ সিদ্দিকীর প্রথম এবং সৌজন্য সাক্ষাত ছিলো এটি। কিন্তু আলোচনার পরিধি বা গভীরতায় সৌজন্য বৈঠকটি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে ওঠে- পাকিস্তান মিশনের বরাতে এমনটাই জানিয়েছে তার্কিশ নিউজ এজেন্সি আনাদুলু। বুধবার এ নিয়ে তারা একটি প্রতিবেদন করেছে। অবশ্য পররাষ্ট্র দপ্তর এখনও এ নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বিবৃতি দেয়নি, তবে বৈঠক বা আলোচনা কথা মানবজমিনের কাছে স্বীকার করছেন দায়িত্বশীল প্রতিনিধিরা।
ঢাকার ডেটলাইনে প্রচারিত তার্কিশ সংবাদ মাধ্যমের রিপোর্ট যা পাকিস্তান এনডোর্স করেছে তাতে মন্ত্রী ও হাই কমিশনারের এক ফ্রেমে থাকা ছবিও সংযুক্ত রয়েছে। ‘পাকিস্তান, বাংলাদেশ হোল্ড টকস ইন পসিবল থ্রো’ শিরোনামে প্রচারিত রিপোর্টের সাব হেডে পাকিস্তানী দূতকে উদ্বৃত করে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক বৃদ্ধিতে দেশটির আগ্রহের বিষয়টি ফোকাস করা হয়েছে।
রিপোর্টে কর্মকর্তাদের বরাতে বলা হয়েছে- বাংলাদেশ-পাকিস্তান টপ ডিপ্লোমেট পর্যায়ের সাম্প্রতিক বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে প্রমোট বা এ এগিয়ে নিতে সম্ভাব্য সকল উপায়ের ব্যবহারে জোর দেয়া হয়েছে। পাকিস্তান দূতকে উদ্বৃত করে তার্কিশ রিপোর্ট বলছে, তিনি আনাদুলু এজেন্সিকে বলেছেন ‘দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বৃদ্ধিতে আগামীর সম্ভাব্য সব উপায় বা উদ্যোগ কাজে লাগাতে আমরা উভয় পক্ষ সম্মত হয়েছি।’
১৯৪৭ থেকে ৭১ অবধি অখন্ড পাকিস্তানের শাসকরা নানাভাবে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণকে বঞ্চিত করে। ব্যাপক বঞ্চনা আর নিপীড়নের এক পর্যায়ে একাত্তর সনে চাপিয়ে দেয়া যুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করে। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধপরবর্তী সময়ে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হলেও তা আজ অবধি তা তেমন এগোয়নি। বরং যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রশ্নে তাতে বেশ বরফ জমেছে।
আনাদুলু তাদের রিপোর্টে নিজস্ব ভঙ্গিতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরেছে। তাতে মন্ত্রীর সঙ্গে হাই কমিশনারের ১লা জুলাই’র বৈঠককে রেফার করে বলা হয়েছে, সেই বৈঠকে কোভিড১৯ ঠেকাতে দুই দেশ যেসব উদ্যোগ গ্রহণ করেছে তা নিয়ে পারস্পরিক মতবিনিময় হয়েছে। পাকিস্তান হাই কমিশনার সিদ্দিকী বলেন, ‘আমরা ভ্রাতৃসুলভ বাংলাদেশের সঙ্গে শক্তিশালী সম্পর্ক চাই।’