সাতক্ষীরায় বেসরকারি একটি ব্যাংকের এজেন্ট শাখা ও সমবায় সমিতি খুলে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া প্রতারক চক্রের প্রধান হাবিবুর রহমানকে আটক করেছে র্যাব। মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ তথ্য জানায় র্যাব। অন্যদিকে, প্রতারণার ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে সাতক্ষীরা সদর থানায়।
প্রতারক হাবিবুর রহমান (৩৫) সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার বাকড়া গ্রামের আজিজুর রহমানের ছেলে। বর্তমানে শহরের পলাশপোল এলাকায় শ্বশুর বাড়ির বাসিন্দা তিনি। মামলার বাদী সাধন চন্দ্র সরকার দেবহাটা উপজেলার হিজলডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা।
মামলার অভিযোগ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালে সদর উপজেলার ব্যাংদহা বাজারে সিটি ব্যাংকের একটি এজেন্ট শাখা চালু করেন হাবিবুর রহমান। নিজেকে সিটি ব্যাংক ব্যাংদহা শাখার চেয়ারম্যান পরিচয় দিয়ে কর্মী নিয়োগ দেন ৩০ জন। প্রত্যেকের নিকট থেকে জামানত গ্রহণ করেন এক থেকে তিন লাখ টাকা। এরপর বনলতা সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি নামে আরেকটি অফিস চালু করেন। অধিক মুনাফার লোভ দেখিয়ে নিয়োগকৃত কর্মীদের দিয়ে গ্রাহক সংগ্রহ করতে থাকেন। একপর্যায়ে শত শত মানুষ বিভিন্ন অংকের টাকা সেখানে জমা রাখেন। যারা কেউই টাকা ফেরত পাননি। এরপর হঠাৎই এজেন্ট শাখার কার্যালয় ও সমিতির অফিস বন্ধ করে লাপাত্তা হয়ে যান হাবিবুর।
সাতক্ষীরা র্যাব ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মেজর গালিব জানান, এলাকাবাসী অভিযোগ করেন তারা প্রতারণার শিকার হয়েছেন। সেই অভিযোগে প্রতারক চক্রের প্রধান হাবিবুর রহমানকে সোমবার (২ জানুয়ারি) বিকেল ৫টার দিকে শহরের পলাশপোল এলাকা থেকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে হাবিবুর রহমান স্বীকার করেছে এলাকাবাসীর কাছ থেকে এক কোটি টাকা হাতিয়েছে। সেই টাকা নষ্ট করে ফেলেছে। এছাড়া যে এনজিও খুলেছিলেন হাবিবুর সেটি ভুয়া।
এদিকে, হাবিবুর রহমান আটকের খবরে সাতক্ষীরা সদর থানায় জড়ো হয়েছেন প্রতারণার শিকার হওয়া শতাধিক গ্রাহক। আইনগতভাবে তারা এই ঘটনার প্রতিকারের দাবি জানান।
সাতক্ষীরা সদর থানার ওসি আবু জিহাদ ফকরুল আলম খান বলেন, প্রতারণার ঘটনায় প্রতারক হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। তদন্তকালে এই চক্রে জড়িত যাদের নাম আসবে তাদের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া আসামি গ্রেফতারের পর গ্রামবাসীদের অনেকে থানায় আসছেন, তাদেরও আইনি সহায়তা প্রদান করা হবে। এলাকাবাসী অভিযোগ করছে, বেসরকারি একটি ব্যাংক ও সমবায় সমিতি খুলে টাকা লুট করে দুই বছর ধরে সে পলাতক ছিল।