শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে দেশটির ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন। আজ শুক্রবার তিনি এই শপথ নেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় জানিয়েছে, প্রধান বিচারপতি জয়ন্ত জয়সুরিয়ার সামনে রনিল ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন। খবর বিবিসি ও ইউএনবি।
বিবিসির প্রতিবেদন বলছে, শ্রীলঙ্কা খাদ্য, জ্বালানি এবং অন্যান্য মৌলিক সরবরাহের তীব্র ঘাটতির মুখোমুখি হলে ফুঁসে ওঠে জনতা। এরপর সরকারের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন তাঁরা। এক পর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা দেশটির প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির সরকারি বাসভবন দখল করে। পরে প্রথমে বাসভবন ও পরে দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হন সদ্য পদত্যাগ করা প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে।
গতকাল হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, রাজাপাকসে প্রথমে মালদ্বীপ এবং সেখানে ঠাঁই না পেয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার সিংগাপুরে পৌঁছান তিনি।
সিংগাপুর থেকে স্পিকারকে পাঠানো একটি ইমেইলে পদত্যাগপত্র পাঠান রাজাপাকসে। সেটি কার্যকরের পর আজ ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন রনিল বিক্রমাসিংহে।
ইউএনবির প্রতিবেদন বলছে, শ্রীলঙ্কার সংসদের স্পিকার মাহিন্দা ইয়াপা আবেবর্ধন বলেছেন, রাজাপাকসে প্রেসিডেন্টের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন এবং তা বৃহস্পতিবার থেকে কার্যকর হয়েছে। নতুন নেতা নির্বাচনে আইনপ্রণেতারা শনিবার সংসদ আহ্বান করবেন। তাদের নির্বাচিত ব্যক্তি রাজাপাকসের মেয়াদের বাকি সময় (২০২৪ সালে শেষ হবে) দায়িত্ব পালন করবেন। এ প্রক্রিয়াটি সাত দিনের মধ্যে সম্পন্ন হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন স্পিকার।
বিবিসির প্রতিবেদন বলছে, ক্ষমতাসীন দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায়, সেখানের এমপিরা রাজাপাকসে পরিবারের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কযুক্ত রনিল বিক্রমাসিংহেকে সমর্থন করবেন বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু, শ্রীলঙ্কার জনসাধারণ সেটা মেনে নেবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে। কারণ, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে রনিলের পদত্যাগ ছিল বিক্ষোভকারীদের অন্যতম দাবি।
এই সপ্তাহের শুরুতে বিক্ষোভকারীরা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর কম্পাউন্ডে হামলা চালায় এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। গতকাল সংঘর্ষে ২৬ বছরের এক বিক্ষোভকারীর মৃত্যুর খবর জানা গেছে।
মানরি পাবাসারি নামে বিক্ষোভকারী আকেজন বিবিসিকে বলেছেন, ‘রনিল বিক্রমাসিংহের কোনো জনগণের ম্যান্ডেট নেই এবং তিনি রাজাপাকসের সমর্থক হিসেবেই সুপরিচিত।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি বলতে চাচ্ছি যে, নতুন রাষ্ট্রপতি এবং নতুন প্রধানমন্ত্রীর রাজাপাকসের সমর্থক হওয়া উচিত নয়।’