শাহেদের বিরুদ্ধে বেরিয়ে আসছে আরো বহু ভয়ঙ্কর তথ্য। পথচারীকে গাড়িচাপা দেওয়াতেন শাহেদ পরিচিত চালকদের দিয়ে, সেই চালককে দেওয়া হত সাজানো এই প্রতি দুর্ঘটনায় আট হাজার টাকা। চাপা খাওয়া সেই পথচারীকে রিজেন্ট হাসপাতালে এনে চলত দুর্ঘটনা বাণিজ্য!
গাড়িচাপা দিয়ে হাসপাতালে নিতেন শাহেদ, এক রোগী নিলেই চালক পেত ৮০০০। রাজধানীর উত্তরা এলাকায় কয়েকজন গাড়িচালকের সঙ্গে চুক্তি ছিল শাহেদের। তারা রাস্তায় ঘুরে ঘুরে পথচারীকে চাপা দিয়ে রোগী বানিয়ে গাড়িতে করে তার হাসপাতালে রেখে চলে যেত। এভাবে একজন রোগী রেখে দিতে পারলে তাকে দেওয়া হতো আট হাজার টাকা করে। আর অচেতন অবস্থায় রোগীকে হাসপাতালের আইসিইউতে ঢুকিয়ে তার স্বজনদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা আদায় করতেন শাহেদ। কয়েকজন ভুক্তভোগী পুলিশ ও র্যাবের তদন্তকারীর কাছে এ ভয়ংকর অভিযোগ করেছেন।
তারা বলছেন, কয়েকজন চালককে টাকার লোভ দেখিয়ে শাহেদ এই ভয়ংকর অপকর্ম চালাচ্ছিলেন। তার হয়ে রিজেন্ট হাসপাতালে জনসংযোগ কর্মকর্তা তারেক শিবলী এ লেনদেন করতেন। আইসিইউ’য়ের প্রয়োজন নেই সামান্য আহত এমন কয়েকজন রোগীকে দ্রুত আইসিইউতে নিয়ে আটকে রেখে তাদের কাছ থেকে দুই লাখ টাকা আদায় করায় স্বজনরা সন্দেহ করেন। পরে দুর্ঘটনার জন্য দায়ী এবং হাসপাতালে বহন করে নিয়ে যাওয়া চালকদের সঙ্গে রিজেন্ট হাসপাতালে যোগাযোগের তথ্য পান ভুক্তভোগীরা। এসব অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানায় সংশ্লিষ্ট সূত্র।
ভুক্তভোগী ও তদন্তসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, প্রতারক শাহেদ অনেকের কাছেই রিজেন্ট এয়ারওয়েজকে তার প্রতিষ্ঠান বলে প্রচার করতেন। তার অপকর্ম ফাঁস হওয়ার পর রিজেন্ট এয়ারওয়েজ কর্তৃপক্ষও বিব্রত। তারা শাহেদের এই প্রতারণার বিচার চেয়েছেন। আবার একই নামে শাহেদ কিভাবে একটি প্রতিষ্ঠান খুললেন, তা তদন্তের দাবি জানিয়েছেন চট্টগ্রামের রিজেন্ট গ্রুপসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘তাকে গ্রেপ্তার না করা পর্যন্ত সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’
রিজেন্ট হাসপাতালে ভুয়া কোভিড-১৯ সনদ ও করোনা পরীক্ষা ও চিকিৎসায় রোগীদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ে অনিয়মের অভিযোগে রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহেদসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। এরপর থেকেই পলাতক রয়েছেন শাহেদ।