![InShot_20230219_233610740](https://banglaexpressonline.com/wp-content/uploads/2023/02/InShot_20230219_233610740.jpg)
আবদুল্লাহ আল মামুন, সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি: লাগামহীনভাবে পোল্ট্রিফিড ও অন্যান্য খাবারের দাম বৃদ্ধিতে বিপাকে পড়েছেন সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার প্রান্তিক খামারিরা। অনেকেই খামার বন্ধ করে দিয়ে তাদের পেশা বদলে ফেলছেন।
তবে সরকার যদি পোল্ট্রি পালনের সাথে সংশ্লিষ্ট জিনিসের উপর ভর্তুকির ব্যবস্থা করেন বা খামারিদের সহজ শর্তে ঋণ দানের ব্যবস্থা করেন তাহলে শিল্প টিকিয়ে রাখা সম্ভব বলে অনেক অভিমত ব্যক্ত করেন। উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, এ উপজেলায় সবমিলে আট শ’র অধিক মুরগির খামার রয়েছে।
এদিকে সাতক্ষীরায় খামারি পর্যায়ে গড়ে প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা কেজি দরে। অথচ এক কেজি ওজনের একটি ব্রয়লার মুরগি উৎপাদনে খরচ হচ্ছে ১৭০-১৮০ টাকা। খামারি পর্যায়ে মুরগির দাম কম হলেও ভোক্তা পর্যায়ে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে ফার্মের মুরগি। বর্তমানে পাটকেলঘাটায় ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২১০-২২০ টাকা। গতসপ্তাহে ব্রয়লার মুরগির কেজি ছিল ১৮০-১৯০ টাকা। এছাড়াও কেজিতে ১০-২০ টাকা দাম বেড়ে সোনালি মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৪০-২৫০ টাকা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভাইরাসের আক্রমন ও বিভিন্ন সময়ে দরপতনের কারনে বছর দুয়েক আগেও যে সকল পোল্ট্রি খামার বড় ছিলো সেগুলো ছোট করে ফেলেছেন খামারিরা। অনেকেই পোল্ট্রি খামারের জিনিসপত্র বিক্রি করে দিয়েছেন। খামারিরা অনেকে এ ব্যবসায় লোকসান গুণে পেশা পরিবর্তন করেছেন। অনেকে অন্য পেশাতে না যেতে পেরে এখনো লোকসান গুনছেন।পাটকেলঘাটার কুমিরার পোল্ট্রি খামারি কাজী নজরুল ইসলাম হিল্লোল বলেন, খামারে ডিমের উৎপাদন ভালো হলেও খাদ্যে ঔষধপত্রের দাম বেশি হওয়াতে লোকসানে গুনতে হচ্ছে। ডিলারদের কাছ থেকে খাদ্য কিনতে হয়। অন্যদিকে ডিমের যে সঠিক মূল্য রয়েছে তা পাচ্ছি না। লোকসানের মুখে পড়ে ধার দেনা করে ঋণ পরিশোধ করেছি। কেউ আবার এই শিল্প বাদ দিয়ে বিদেশ চলে যাচ্ছে। পাটকেলঘাটা প্যারাগন ফিড ডিলার সুভাষ জানায়, যে ব্রয়লার ফিড গত বছর এ সময় ২২৫০ টাকা ছিল তা এখন ৩৪৫০ টাকা, সোনালী ফিড ২৫০০-৩২০০ টাকা, লেয়ার ১৯০০-৩২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
আরেক খামারি তৈলকুপি গ্রামের সুজন দাস জানান, মুরগির খাবারের দাম বৃদ্ধির ফলে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। গত বছরেও যেখানে বস্তা প্রতি ফিডের মূল্য ছিল দু’হাজার দুইশত টাকা। চলতি বছর প্রতি বস্তায় গুণতে হচ্ছে দ্বিগুণ টাকা। এভাবে চলতে থাকলে মাথায় হাত দেওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না। এভাবে চলতে থাকলে অচিরেই পল্ট্রি চাষে ধস নামবে। তিনি আরও জানান, এ বছর ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে তার দুহাজার মুরগী মারা গেছে। ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে তিনি আর নতুন করে খামারে বাচ্চা তুলতে পারছেন না বলে জানান। তালা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার বিশ্বাস জানান, মুরগির দাম কম, দীর্ঘ সময় থাকায় অনেক খামার ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে বন্ধ আছে, তাই এই সংকট তৈরি হয়েছে, তবে অনেকে আবার নতুন করে বাচ্চা তুলছে, সংকট কেটে যাবে। মুরগি ও ডিমের দাম বেশি হওয়ায় নতুন করে খামারিরা চাষ করবে এমনটি আশা করেন এ কর্মকর্তা।